পেনশনমন্ত্রী আম্বার রুড
ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যাত হলে অনেক কিছু ঘটতে পারে
১১ ডিসেম্বর ব্রিটিশ পার্লােমেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর এমপিদের ভোটাভুটি
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি এমপিদের অনুমোদন না পেলে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য আম্বার রুড। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় গণভোট বা কথিত নরওয়ে প্লাসের মতো বিকল্প বিবেচনা করা হতে পারে।
ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন না হলে বিকল্প নিয়ে প্রথম মন্ত্রী হিসেবে প্রকাশ্যে কথা বললেন কর্ম ও পেনশনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী আম্বার রুড। যদিও তিনি থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে সমর্থন করছেন। রুড জানান, এমপিরা ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যান করলে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। তিনি একটি বিশৃঙ্খল সময়ের ইঙ্গিত দেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস’কে রুড জানান, সম্ভাব্য বিকল্পগুলোর মধ্যে বতর্মান ব্রেক্সিট চুক্তির চেয়ে সবচেয়ে ভালো। যদি ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যাত হয়, তাহলে বিকল্প হিসেবে নরওয়ের মতো অবস্থান বেছে নেবেন। নরওয়ে ইইউ সদস্য নয়, কিন্তু ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের অংশ।
থেরেসা মে গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, তিনি যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যে খসড়া চুক্তি করেছেন, সেটা যদি এমপিরা মেনে নিতে না চান, তাহলে তারা ‘নো ডিল ব্রেক্সিটকেই’ ডেকে আনবেন। আর যদি ‘নো ডিল ব্রেক্সিটও’ না চান, তাহলে তারা কার্যত ব্রেক্সিট বাতিলের দিকেই ঠেলে দেবেন যুক্তরাজ্যকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ব্রেক্সিট বাতিল হয়ে যাওয়াটা থেরেসার কাম্য নয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, যে গণভোটের মাধ্যমে ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তাকে সম্মান করা উচিত।
ব্রিটিশ প্রধামন্ত্রী বলেন, ‘এখন তিনটি পথ রয়েছে: ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে কোনো চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে যাওয়া, পার্লােমেন্টে চুক্তি পাস করিয়ে ব্রেক্সিট কাযর্কর করা অথবা ব্রেক্সিটের পরিকল্পনাই বাদ দেয়া।’
থেরেসা জানিয়েছেন, তিনি তার খসড়া ব্রেক্সিট প্রস্তাবকে সমর্থন করার বিষয়ে এমপিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি মনে করেন, ‘নর্দান আয়ারল্যান্ড ব্যাকস্টপের’ বিষয়ে পার্লােমেন্ট আরও বেশি কিছু করতে পারে। নর্দান আয়ারল্যান্ডে যুক্তরাজ্যের শুল্ক ব্যবস্থা কার্যকর হবে কিনা বা ইইউ সদস্য রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ডের মতো ইইউয়ের শুল্ক ব্যবস্থা কার্যকর হবে, সেটা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের পার্লােমেন্ট ১১ ডিসেম্বর ব্রেক্সিটের খসড়া প্রস্তাব নিয়ে যে ভোটাভুটি হওয়ার কথা, সেটা পিছিয়ে দেয়ার কথা ভাবছেন কিনা, সে প্রশ্ন বার বার এড়িয়ে গেছেন থেরেসা।
ব্রিটিশদের মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে রয়েছে প্রবল ভিন্নমত। জরিপে ব্রেক্সিট গণভোট-পরবর্তী সময় দেশটির জনগণের মনোভাব পাল্টে যাওয়ার চিত্র দেখা গেছে। অন্যদিকে, তেমনি ব্রেক্সিটবিরোধীদের অনেকে দাবি তুলেছেন আরেকটি গণভোটের। ব্রেক্সিট চুক্তি চ‚ড়ান্ত করা নিয়ে মতবিরোধের জেরে পদত্যাগ করেছেন দুই-দুইজন ব্রেক্সিট-বিষয়কমন্ত্রী। অন্য মন্ত্রণালয়েরও কয়েকজন সরে দাড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে সর্বশেষ হচ্ছেন বিজ্ঞান ও বিশ্ববিদ্যালয়-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। এসবের পাশাপাশি, থেরেসা মেকে ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির সংসদীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিতে আস্থা ভোটের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন দলটির বেশ কয়েকজন এমপি। ৪৮ জন দাবি করলেই ডাকা হবে আস্থা ভোট। আগামী মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লােমেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর এমপিদের ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে।