৩০ শিশু দত্তক নেয়া ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আফিয়াকে সংবর্ধনা
গত দশ বছরে ত্রিশটি শিশুকে দত্তক সন্তান হিসেবে গ্রহণ করেছেন এক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নারী। নিজের চার সন্তানের পাশাপাশি অসহায় এই শিশুদের বড় করছেন মাতৃস্নেহে। ব্যতিক্রমী এই নজির সৃষ্টির জন্য আফিয়া চৌধুরী নামে এই নারীকে বৃহস্পতিবার সংবর্ধনা দিয়েছে লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল। পুর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীনের অট্রিয়াম হলে তাকে সংবর্ধিত করেন টাওয়ার হ্যামলেটস মেয়র জন বিগস। টাওয়ার হ্যামলেটস ফষ্টারর্স কেয়ারার এসোসিয়েশনের সভাপতি আফিয়া ও তাঁর স্বামী কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, কেবল দত্তক নেওয়া শিশুদের দেখাশোনার জন্য নিজেদের ঘরের পরিধি বাড়িয়েছেন তারা। তাদের এ উদ্যোগ অন্য দম্পতিদেরও শিশুদের দত্তক নিয়ে দেখভাল করতে উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন তারা। শুক্রবার টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র জন বিগস বলেন, আফিয়াকে সন্মানিত করতে পেরে তিনি আনন্দিত।
আফিয়া চৌধুরী শুধু যে মাতৃস্নেহে এই তিন বাচ্চাকে প্রতিপালন করছেন, তা নয়, অসংখ্য শিশুর জীবনে তিনি মায়ের স্নেহ মমতা দিয়েছেন এবং টাওয়ার হ্যামলেটস’ ফস্টার কেয়াররাস এসোসিয়েশনের চেয়ার হিসেবে অন্যান্য ফস্টার ফ্যামিলি বা শিশু প্রতিপালনকারী পরিবারগুলোকেও সহকর্মী হিসেবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। অন্যান্য পরিচর্যাকারীদের কাছ থেকে তিনি গত এক বছরে ৪৬০টিরও বেশি ফোন কল পেয়েছেন। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ফস্টার এম্বাসেডর হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে নতুন ফস্টার কেয়ারার নিয়োগে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত রয়েছেন।
আফিয়া চৌধুরী বলেন, দত্তক নেওয়া শিশুদের দেখাশোনা করতে পেরে আমি ভীষণ খুশি এবং সম্মানিত বোধ করছি। আমি টাওয়ার হ্যামলেটসকে ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা বছরের পর বছর ধরে আমার কথা শুনে, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সহযোগিতা দিয়েছে এবং অসাধারণ কিছু বাচ্চাকে প্রতিপালন করার সুযোগ দিয়ে আমাকে ভাগ্যবান হওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাচ্চাদের জীবনে পরিবর্তন আনতে আমি ফস্টারিংয়ে এসেছিলাম, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারাই আমার জীবনে পরিবর্তন এনেছে। যারা ফস্টার কেয়ারার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন, আমি তাদেরকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি। নানা কারণে অসহায় হয়ে পড়া বাচ্চাদের প্রতিপালন জীবন বদলে দেয়ার অভিজ্ঞতা, যা আমি আর কোন কিছুর বিনিময়ে পরিবর্তন করবো না।