খ্রিস্টানরাই বড়দিন নিষিদ্ধ করেছিল
ডিসেম্বরে ক্রিসমাস বা বড়দিন। এ মাসটি খ্রিস্টানদের জন্য উৎসবের সময়। আগেকার দিনের ব্রিটেনেও বিষয়টা তেমনই ছিল। যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন ঘিরে তখন পুরো মাস জুড়ে সাধারণ মানুষ আনন্দে মেতে থাকত। পানশালাগুলোতে লেগে থাকতো লোকজনের ভিড়। পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে সবাই খাওয়া-দাওয়া-গান-বাজনার মধ্যে দিয়ে সময় কাটাত। তবে শুদ্ধতাবাদী খ্রিস্টানরা এগুলোকে পাপাচারিতা বলে মনে করত। অনেক সময় অবশ্য বাড়াবাড়িও করত অনেকে। কিন্তু ১৬৪৪ সালে শুদ্ধতাবাদী খ্রিস্টানরা ক্রিসমাস রহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
প্রটেস্টান্ট খ্রিস্টান মতের অনুসারী ক্রিসমাসের বিরোধী ছিল। তাদের মতে, এসব হচ্ছে বর্বর ও ধর্মহীনদের উৎসব, যার সাথে খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বলত, ২৫শে ডিসেম্বর যে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন বাইবেলে এমন তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই।
সেখানে তাই বেশ কিছুদিন ক্রিসমাসের সাথে সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ছিল। এমনকি সেদিন গির্জাগুলোতে ধর্মীয় প্রার্থনাও অবৈধ ছিল। আমেরিকাতেও শুদ্ধতাবাদী খ্রিস্টানরা এই উৎসবকে ধর্মবিরোধী বলে মনে করতো। সেখানেও কিছু এলাকায় একই কারণে ক্রিসমাস নিষিদ্ধ ছিল। যেমন ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে ১৬৫৯ থেকে ১৬৮১ সাল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল।
এসব নিষেধাজ্ঞা সহজে মেনে নেয়নি অনেকেই। ধর্মীয় গান গাওয়া, পান করা আর উৎসবের অধিকারের দাবিতে ব্যাপক প্রতিবাদও হয়েছে। ইংল্যান্ডে ১৬৬০ সাল পর্যন্ত ক্রিসমাস নিষিদ্ধ ছিল। চার্লস দ্বিতীয় সিংহাসনে বসার পর এ আইনটি রহিত করা হয়। আর এভাবেই শেষমেশ ক্রিসমাস ফিরে আসে। -বিবিসি বাংলা