ঘুরে এলাম একদিন আরবের শেখ জায়েদ মসজিদ
শেখ জায়েদ মসজিস সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে অবস্থিত। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৃহত্তম মসজিদ এবং বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম মসজিদ। তবে লোকমুখে প্রচার আছে, এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ। মসজিদের দালানের উচ্চতা ২৭৯ ফুট, ভিন্ন ভিন্ন সাতটি আকারে ৮২টি গম্বুজ, চার কোণে চারটি মিনার। এতে পুষ্পশোভিত নকশা রয়েছে। মিনারগুলোর উচ্চতা ৩৫১ ফুট। এতে ব্যবহার করা হয়েছে দীর্ঘস্থায়ী মার্বেল পাথর, মূল্যবান পাথর, স্ফটিক ও মৃৎশিল্প।
সরকারি মালিকানাধীন এই মসজিদ নির্মাণে খরচ হয়েছে ৫৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর ডিজাইন ও নির্মাণে ইতালি, জার্মানি, মরক্কো, পাকিস্তান, ভারত, তুরস্ক, মালেশিয়া, ইরান, চীন, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, গ্রিস, সংযুক্ত আরবসহ অনেক দেশ থেকে কারিগর ও উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। তিন হাজার কর্মী ও ৩৮টি কোম্পানি এই মসজিদ নির্মাণে অংশগ্রহণ করে। আমিরাতের সাবেক রাষ্ট্রপতি শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহইয়ানের সমাধিস্থল মসজিদের পাশে।
এখানে মূলত জুমার নামাজ ও দুই ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। একসঙ্গে ৪০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করার কথা থাকলেও দুই ঈদে এক থেকে দেড় লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজারের অধিক বাংলাদেশি। মসজিদের তিনটি প্রার্থনাকক্ষ রয়েছে। প্রধান প্রার্থনাকক্ষ ছাড়া বাকি দুটি ছোট কক্ষ। এর একটি কক্ষ নারীদের জন্য।
এ ছাড়া সপ্তাহের অন্য দিনগুলো পর্যটকদের ভিড়ে থাকে মুখরিত। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ এটি। অন্য পর্যটকদের সঙ্গে এখানে সমাবেত হয় বাংলাদেশি দর্শনার্থীরাও। সপ্তাহের ছয় দিন কর্মব্যস্ততার মধ্যে কেটে গেলেও এই মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য শুক্রবারের অপেক্ষা সবার। সকাল আটটা থেকে সমবেত হতে থাকে মুসল্লিরা। কেউ কেউ এর আগেও এসে হাজির হন। কারণ, মসজিদের ভেতর নামাজ আদায়ের জায়গা পূর্ণ হয়ে যায় অনেক আগে। এতে বেশির ভাগ আমিরাতে শেখ ও নাগরিক। দেরিতে পৌঁছালে মাঠেও জায়গা পাওয়া দুষ্কর। তাই সকাল থেকে মুসল্লিদের ঢল নামে এখানে। শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের জন্য এখানে সমবেত হয় ন্যূনতম ১০ হাজার বাংলাদেশি। এ যেন পরবাসে বাংলার মিলনমেলা।
কামরুল হাসান, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত