জামায়াতের ২৫ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন
জামায়াতে ইসলামীর ২৫ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। ‘যেহেতু নির্বাচন কমিশন তাদের প্রার্থিতা অনুমোদনসহ প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে, সেহেতু এ পর্যায়ে এসে তাদের প্রার্থিতা বাতিলের কোনো সুযোগ নেই’ বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ এ তথ্য জানান।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা থাকবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে দুইটি আলোচ্যসূচি ছিল- প্রথমটি- ব্যালট পেপার মুদ্রণসহ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক অগ্রগতি, দ্বিতীয়টি- হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা রিট পিটিশন ১৬২৩৭/২০১৮ বিষয়ে আদালতের রুল। এ ছাড়া তৃতীয় আলোচ্যসূচিতে রয়েছে বিবিধ বিষয়। এই বিবিধ আলোচ্যসূচিতে আদালতের আদেশে বিএনপির প্রার্থীশূন্য হওয়া আসনে দলটির বিকল্প প্রার্থী মনোনয়ন বা বর্তমান তফসিল স্থগিত করে পুনঃতফসিলের আবেদনের বিষয়টিও আলোচনা হয়।
প্রসঙ্গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর ২৫ প্রার্থীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী একটি রিট দায়ের করেন। রিটটির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। গত সোমবার ও মঙ্গলবার রিটের শুনানি হয়। রিটে নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জামায়াতের আমীর, সেক্রেটারি জেনারেলসহ ২৫ প্রার্থীকে বিবাদী করা হয়েছে।
১৮ ডিসেম্বর বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে রিট শুনানি শেষে রুল জারি করে আদেশ দেন। আদেশে তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিবসহ চারজনের আবেদন তিনদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থিতার বিষয়ে আমরা আজ হাইকোর্টের চিঠি পেয়েছি। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে (রবি/সোমবার) মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের চেয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, গৌরব একাত্তরসহ কয়েকটি সংগঠন নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রার্থী নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘তারা শুধু ধানের শীষের প্রতীক নয়, তারা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী। বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষে নির্বাচন করছেন তারা। বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ তাদের দেয়া হয়েছে। জামায়াত তাদের মনোনীত করেনি। বিএনপি মনোনীত করেছে।’
বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া জামায়াতের নেতাদের পদ-পদবি তাদের দলীয় ওয়েবসাইটে উল্লেখ আছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ওয়েবসাইটে পদ-পদবি থাকুক। আপনারাও যদি আমাদের কাছে মনোনয়ন চান, আমরা দিতে পারি। কোনো ওয়েবসাইটে আপনার নাম কীভাবে আছে সেটা পরের ব্যাপার। আমরা আইনের মাধ্যমে দিতে পারি কি-না সেটা হলো বিষয়।’
জামায়াত প্রার্থীরা হলেন দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ মাওলানা ইকবাল হুসাইন, ঝিনাইদহ-৩ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, যশোর-২ আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, ঢাকা-১৫ ডা. শফিকুর রহমান, সিলেট-৬ মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের, চট্টগ্রাম ১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম ও কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ।