যা বলা হয়েছিল তার চেয়েও বেশি তেলের মজুদ সৌদিতে
সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি আরামকো। সৌদি সরকারের প্রকাশিত তথ্য মতে, কোম্পানিটিতে বর্তমানে মোট ২৬৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ব্যারেল তেল মজুদ রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জ্বালানি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ডিগলিয়ার অ্যান্ড ম্যাকনটন বলছে ভিন্ন কথা। প্রতিষ্ঠানটির মতে, কোম্পানিটিতে বর্তমানে মোট ২৬৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ব্যারেল তেল মজুদ রয়েছে। অর্থাৎ সৌদি সরকারের দেয়া পরিমাণ থেকে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ব্যারেল বেশি।
সম্প্রতি কোম্পানিটিতে অডিটের জন্য ডিগলিয়ার অ্যান্ড ম্যাকনটনকে অনুমতি দেয় সৌদি। অডিট শেষে বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় সৌদি সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি তাদের অডিট শেষ করেছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, আরামকোতে ২৬৮.৫ বিলিয়ন ব্যারেল তেল মজুদ আছে।
সিএনএন বলছে, এই প্রথম স্বাধীন কোনো প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব খনিজ সম্পদের মজুদ খতিয়ে দেখতে অনুমতি দিয়ে বড় ধরনের পরিবর্তনের জানান দিল সৌদি। কারণ এর আগে দশকের পর দশক এ-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য কঠিনভাবে হেফাজত করত দেশটি।
দেশটি এখন শুধু তেল নির্ভরতা থেকে সরে আসতে চায়। এর পরিবর্তে অর্থনীতিতে বিচিত্রতা আনতে চায় সৌদি সরকার। এর আগে সৌদি সরকার চেয়েছিল, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত আরামকোর মালিকানা আইপিওর (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) দেশের জনগণের হাতে আসুক। এজন্য গত বছর উদ্যাগ নেয়ার পরিকল্পনাও ছিল। পরে অবশ্য সেটি থেমে গেছে।
তবে ২০২১ সালে এ বিষয়ে ফের উদোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী। সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহর উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে জ্বালানির মজুদের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য রয়েছে। বলা যেতে পারে, সেক্টরটিতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। এটিই তেল মজুদ কোম্পানিটির সম্ভাব্য বিক্রয় ও এর ভাবমূর্তিকে বাধাগ্রস্ত করছে। তবে এটি (আইপিও) ফের চালু করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে আরামকোতে যে পরিমাণ তেল মজুদ আছে তার মাত্র ৫ শতাংশ বিক্রি করা গেলে আয় হবে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের ফান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ২০৩০ হলো আগামী এক দশকে সৌদির অর্থনীতি কোন পর্যায়ে যাবে তার একটি রূপরেখা।
আরামকোর বর্তমান মজুদ মূল্য ও ক্ষমতা নিয়ে বুধবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী আল ফালিহ বলেন, ‘পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানটির এই অডিটই বলে দেয় সৌদির আরামকো বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি।’ তবে বিবৃতিতে আইপিওর বিষয়টি উল্লেখ করেননি তিনি।
সৌদি আরব গত বছর রেকর্ড পরিমাণ তেল উত্তোলন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নভেম্বরে গড়ে প্রতিদিন ১১ মিলিয়ন (১ কোটি ১০ লাখ) ব্যারেল তেল উত্তোলন করা হয়েছে।