দফায় দফায় পরাজিত হয়ে চাপের মুখে মে
ব্রেক্সিট নিয়ে দফায় দফায় নতুন করে নাজেহাল হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। পার্লামেন্টে এমপি’দের তৎপরতায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মে দু’দফায় পরাজিত হয়ে চাপের মুখে পড়েছেন। প্রথমত, পার্লামেন্টের সর্বদলীয় এমপি’রা চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে একটি সংশোধনী প্রস্তাব পাস করে। এর কয়েকঘন্টা যেতে না যেতেই এমপি’রা আগামী সপ্তাহের ভোটাভুটিতে ‘ব্রেক্সিট চুক্তি’ পাস না করলে চটজলদি নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মে’কে হাজির হওয়ার দাবি জানিয়ে আরেকটি সংশোধনীতে সমর্থন দিয়েছে।
বিরোধী টোরি এমপি’রা বিরোধীদল লেবার পার্টির সঙ্গে যোগ দিয়ে কমন্সের ভোটাভুটিতে মে সরকারকে এ নাজুক পরিস্থিতিতে ফেলেছে। এতে করে গণভোটের মত বিকল্প পন্থা নেওয়ার পটও প্রস্তুত হতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) জন্য হাতে আছে তিন মাসেরও কম সময়। এরই মধ্যে এমপি’রা তাদের শক্তি জানান দিয়ে মে’র ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ৫ দিনব্যাপী লড়াই শুরু করেছে পার্লামেন্টে। এতে করে মে নতুন ব্রেক্সিট পরিকল্পনার জন্য আশানুরূপ সময় পাবেন না।
মে’ সরকারের পরিকল্পনা ছিল, পার্লামেন্টে আগামী সপ্তাহের ভোটে ব্রেক্সিট চুক্তি পাস না করলে ২১ দিন সময় নিয়ে আরেকটি ‘প্ল্যান বি’ পরিকল্পনা নিয়ে আসা। কিন্তু এমপি’দের দাবি অনুযায়ী, এখন ব্রেক্সিট চুক্তি পাস করাতে ব্যর্থ হলে মে’ কে মাত্র ৩ দিনেই ওই পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হতে হবে। এর আগে মঙ্গলবার এমপি’রা সাবেক দুই টোরি মন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারের আর্থিক বিলের (ফাইন্যান্স বিল) সংশোধনী প্রস্তাব পাস করে। যাতে কোনো চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট সহজে না হতে পারে। অর্থাৎ, সরকার যাতে পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়া চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের প্রস্তুতিতে অর্থব্যয় করতে না পারে সেজন্যই এ কৌশল নেওয়া হয়। বিরোধীদলীয় এমপি’রা প্রস্তাবটিতে সমর্থন দেন। আর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের আইনপ্রণেতারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। পক্ষে ৩০৩ এবং বিপক্ষে ২৯৭ ভোটে পাস হওয়া প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী মে’র জন্য বড় রকমের পরাজয় বয়ে আনে। মে’র ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ১৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। ভোটে ব্রেক্সিট চুক্তিটি পাস না হওয়ার আশঙ্কার কারণে গত ডিসেম্বরে এটি নিয়ে পার্লামেন্টের ভোট পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন মে। তবে এবার তারিখ পিছানো হবে না বলেই জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।