বার্মিংহামে হেফাজতে ইসলামের বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
ওবায়দুল কবীর খোকন, বার্মিংহাম: মিশর, সিরিয়া, বার্মা ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের উপর নির্যাতন, হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ১৩ দফা বাস্তবায়ন এবং সাবেক মন্ত্রী মুফতি ওয়াক্কাস, মানবাধিকার কর্মি আদিলুর রহমান ও আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত সকল নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে বার্মিংহামের স্মলহিলের একটি সেমিনার হলে গত রবিবার সন্ধ্যা ৭ টায় এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিক হয়েছে ।
হেফাজতে ইসলাম বার্মিংহামের সভাপতি মাওলানা এখলাছুর রহামানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী মাওলানা এনামুল হাসান ছাবীরের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা আন্তর্জাতিক মুফাসিসরে কোরআন শায়খুল হাদীস আল্লামা মাওলানা তুফাজ্জল হক হবিগঞ্জী । বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ইউরোপের সভাপতি মুফতি মাওলানা আব্দুল হান্নান ও খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সহসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুক্তরাজ্যের সভাপতি বিশিষ্ট্য লেখক, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ ।
বক্তারা বলেন, ৫ই মে সরকার হেফাজতে ইসলামের উপর যে গণহত্যা চালিয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাতে নিকৃষ্টতম গণহত্যা হিসেবে অধিষ্টিত হয়েছে । সরকার দেশের জাতীয় ইস্যুগুলোকে বাদ দিয়ে নিজের পরিবারের ও যুদ্ধাপরাধী বিচারের নামে বিশ্বেরবাসির সামনে বাংলাদেশের ইমেজ খাটু করে চলেছে । আইন – আদালতের তুয়াক্কা না করে গায়ের জুড়ে সরকার নাস্তিক ব্লাগারদের দ্বারা আন্দোলন চালিয়ে বিচারপতিদের মানসিক ভাবে ভেঙ্গে দিয়ে নিজের পক্ষে রায় নিচ্ছে সরকার ।
তারা বলেন, ৫ই মে’র গণহত্যার আংশিক কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করায় সরকার মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের আদিলুর রহমানকে অন্যায়ভাবে রাতের অন্ধকারে গ্রেফতার করেছে যা পৃথিবীর ইতিহাসে অবিনশ্বর ।
বক্তারা বলেন, নির্বিক, সাহসী কলমযোদ্ধা, মজলুম ও গণ মানুষের মুখপাত্র, দেশের শীর্ষস্থানীয় জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক আমার এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে পত্রিাকর প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছে যা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর নগ্ম-হস্তক্ষেপ ।
তারা বলেন, এমন কোন নির্যাতন নেই যা মাহমুদুর রহমানের উপর করা হয়নি । তার একটাই অন্যায় ছিল তিনি ছিলের মজলুমের পক্ষে ও জুলুমের বিরোদ্ধে ।সত্য ও ন্যায় প্রকাশে আজ তাকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় করার সব আয়োজন করা হচ্ছে ।
সরকারের ৫ই মে’র গণহত্যা চোখেঁ পড়েনি পড়েছে ৭১’র । যুদ্ধঅপরাধদের বিচার দেশের সাধারন মানুষের পাশাপাশি আমরা সকলেই চাই কিন্তু অন্যায়ভাবে নয় । সরকার নিরাপরাধীদের ফাসিঁর রশিতে ঝুলিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে যা প্রকৃত ইসলামপ্রিয় ঈমানদাররা সহজেই মেনে নিবেনা।
বক্তারা কঠোর হুসিয়ারী ভাষা বলেন, অবিলম্বে অন্যায়ভাবে আটককৃত সকল আলেম-উলামা, সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবি ও রাজনীতিবিদ সহ সকল নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে তা না হলে দেশবাসিকে সাথে নিয়ে তুমুল আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে সরকার পতন ঘটানো হবে ।
বক্তারা সুষ্ট ও শান্তিপূর্ণভাবে সরকার দেশ পরিচালিত করুক এটা আমরা সকল দেশপ্রিয় নাগরিক চাই কিন্তু সরকার দেশ পরিচালনায় বাদ দিয়ে আলেম-উলামা নিধন করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে । সরকার দেশের হাজারো সমস্যার সমাধান না করে দেশ থেকে কওমী মাদ্রাসা উঠিয়ে দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে যা কোন আলেম সমাজ মেনে নিতে পারেনা। তারা সরকারকে হিংসাত্মক মনোভাব পরিহার করে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনার আহবান জানান ।
অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, মধুপুরের পীর সাহেব মাওলানা আব্দুল হান্নান, বিশিষ্টি টিভি উপস্থাপক মুফতি আব্দুল মুনতাকিম, খেলাফত মজলিসের মিডল্যান্ডস শাখার সভাপতি আব্দুল মুকিত আজাদ, সৈয়দ ওয়াহিদুদ্দিন, শাহ জালাম মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আব্দুল আওয়াল, বার্মিংহাম বাংলাদেশী বিজনেস এসাসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মালিক পারভেছ, সুরমা মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা জয়নাল আবেদীন, বিশিষ্ট্য কলামিষ্ট সৈয়দ কবির আহমদ, কাজী সেলিম আহমদ, সৈয়দ জুবায়ের আহমদ, আলহাজ্ব আব্দুল আজিজ, আলহাজ্ব মহরম আলী প্রমুখ।