ব্রেক্সিট নিয়ে ইউরোপজুড়ে প্রতিক্রিয়া

বৃটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ইউরোপয়ী ইউনিয়নের নেতারা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড টাস্ক বৃটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেই থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি এক টুইটে লিখেছেন, যদি একটি চুক্তি করা অসম্ভব হয় এবং কেউই কোনো চুক্তি না চান, তাহলে কার শেষতক সাহস আছে যে, একমাত্র ইতিবাচক সমাধান কি হবে তা বলার?

উল্লেখ্য, বৃটেনের ইতিহাসে ক্ষমতাসীন সরকার সবচেয়ে ভয়াবহভাবে একটি বিলে পরাজয়ের শিকার হয়েছে। হাউস অব কমন্সে ৪৩২-২০২ ভোটে এমপিরা প্রত্যাখ্যান করেছেন ওই বিল। এই বিলের অধীনে আগামী ২৯শে মার্চে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের বেরিয়ে যাওয়ার কথা। বিলটি প্রত্যাখ্যান হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন বিরোধী লেবার দলের নেতা জেরেমি করবিন। এ অবস্থায় ডনাল্ড টাস্ক থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা ও রাজনীতিকরা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এখানে তার কিছু তুলে ধরা হলো:

ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যাঁ-ক্লাউডি জাঙ্কার সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, বৃটেনের একটি চুক্তি করার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিষ্কার করতে আমি বৃটেনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। বৃটিশ পার্লামেন্টে ভোটাভুটির খবর প্রকাশের পর পরই তিনি এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেছেন, মঙ্গলবার রাতের ভোটে বৃটেনের অনুপযোগী (ডিজঅর্ডারলি) প্রত্যাহারের (ব্রেক্সিট) ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্রেক্সিট বিষয়ক প্রধান সমঝোতাকারী মাইকেল বার্ণিয়ের বলেছেন, এখন কি করতে হবে সে সিদ্ধান্ত বৃটেনকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, পরের করণীয় কি সে বিষয়টি এখন বৃটিশ সরকারকেই বলতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঐক্যবদ্ধই থাকবে এবং একটি চুক্তি বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

জার্মানি
জার্মান অর্থমন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বলেছেন, ইউরোপের জন্য মঙ্গলবারটা ছিল তিক্ত এক দিন। আমরা ভালোভাবেই প্রস্তুত আছি। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বৃটেনের জন্য হার্ড ব্রেক্সিট বা কড়া দরকষাকষি হবে খুবই কম আকর্ষণের বিষয়। একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন ক্ষমতাসীন খ্রিষ্টান ডেমোক্রেট ইউনিয়ন পার্টির নেতা অ্যানেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার। তিনি বলেছেন, একটি হার্ড ব্রেক্সিট হবে সবচেয়ে খারাপ পছন্দগুলোর একটি।

ফ্রান্স
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বৃটেনকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, এখন মূলত চাপটা তাদের ওপরই। তিনি সতর্ক করে বলেন, চুক্তিহীন একটি ব্রেক্সিট ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এজন্য একটি অন্তর্বর্তী সময় বা পিরিয়ড খুব উপকারী বা দরকারি। তার ভাষায়, আমরা তাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সময়ে সমঝোতামূলক আলোচনা করে যাবো। কারণ, বৃটেন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয় নি।

আয়ারল্যান্ড
একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিয়েছে আইরিশ সরকার। এতে বলা হয়েছে, কোনো চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়া বৃটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়বে- এজন্য তারা প্রস্তুতি নেবে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, দুঃখজনক। মঙ্গলবার রাতের ভোটের ফলে বিশৃঙ্খলভাবে ব্রেক্সিট সম্পাদনের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ফল হিসেবে সরকার এখন এমন একটি ভোটের পর তার প্রস্তুতি জোরালো করবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button