ইসতানবুলের ছাদহীন মসজিদ
ছাদহীন মসজিদের কথা শুনেছেন কখনও? শোনেননি তো, কিন্তু সেই মসজিদের বাস্তবেই অস্তিত্ব আছে, তুরস্কের উত্তর-পূর্ব অংশে কার্ডগার একটি মসজিদ। মসজিদটি নির্মাণের পর থেকে প্রায় ৫৫৭ বছর অতিক্রান্ত, এখনও তার কোনও ছাদ নেই। শুনলে আশ্চর্য হয়ে যেতে হবে মসজিদের জন্য যে ছাদ প্রয়োজন সেই বিষয়ে কখনওই ভাবা হয়নি। তবে তাতে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের কোনও অসুবিধা হয়নি, এই খোলা মসজিদেই তারা এত বছর ধরে নামাজ পড়ে এসেছেন।
মসজিদে দু’টি মিনার আছে, সেগুলোর ভাস্কর্যশৈলীও বেশ অন্যরকম। মেঝে সবুজ ঘাসে ঢাকা। চারপাশ সামান্য উঁচু করে ঘিরে রাখাও হয়েছে। তুরস্কের গোমুশ খানা এবং ট্রাভজোন প্রদেশের সীমানায় এই বিশেষ মসজিদটির প্রকৃত অবস্থান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তা ৮০০ মিটার উঁচুতে অবস্থান করছে। প্রতি বছরই গ্রীষ্মকালে এখানে ভালোমতন পর্যটক সমাগম হয়। ট্র্যাভজোন, জার্সন, গোমশখানা, কার্ডগা রিসর্টে ট্যুর করেন অনেকেই। অনেক মুসলিম পর্যটক শুধুমাত্র এখানে নামাজ পড়ার জন্যই আসেন। মসজিদের ইমাম আকিফ ইয়াজজির মতে, গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চলের ‘দার-উল-ইফতা’ মসজিদের জন্য সাময়িকভাবে আরও একজন ইমাম নিযুক্ত করে দেন, অতিরিক্ত লোকসমাগম সামলানোর জন্য। মসজিদের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা বলতে গিয়ে তিনি চলে যান ইতিহাসের আবর্তে। সে অনেক কাল আগের কথা। ট্রাভজোন বিজয়ের সময় সুলতান আল ফাতেহ তাঁর সৈন্যদের নিয়ে এখানে শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়েন। তখন আচমকা একদিন রাত্রে স্বপ্ন দেখে সুলতান পাথর দিয়ে নামাজ পড়ার জায়গার চারপাশটা ঘেরাও করার আদেশ দেন।
এমনভাবে তা করা হয়, যাতে নামাজ পড়ার জায়গাটি নির্ধারিত এলাকা হিসাবে আলাদাভাবে সংরক্ষিত থাকে। আজও সেখানে একইভাবে নামাজ পড়া হয়। তবে মসজিদটির ছাদ যে নেই, তা কেন সুলতান তৈরি করাননি বা পরবর্তীকালে কেউ উদ্যোগ নেননি, সেই বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট মন্তব্য কারও কাছে পাওয়া যায়নি। হোক না ছাদহীন, তবু এই মসজিদ মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র।