আফ্রিকার সেই বিশ্বাসই এখন ছড়িয়ে পড়েছে ব্রিটেনে
ব্রিটেনে কিশোরীদের স্তন বৃদ্ধি ঠেকাতে আয়রন
পুরুষরা যাতে মেয়েদের দিকে আকৃষ্ট না হয় তার জন্য কিশোরীদের স্তন বৃদ্ধি রুখতে বুকে ইস্ত্রি করা হয়। জানা গিয়েছে, তাদের সুরক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা। এতে কমবে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, যৌন হেনস্থা। আফ্রিকার এই বিশ্বাসই এখন ছড়িয়ে পড়েছে ব্রিটেনে। সেখানে প্রায় এক হাজার মহিলা ও কিশোরীকে এই ঘটনার শিকার হতে হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। এদের মধ্যে ১০ বছরের শিশুও রয়েছে। ব্রিটেনের লন্ডন, ইয়র্কশায়ার, এসেক্স ও ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে এমন বহু ঘটনা ঘটেছে বলে সংবাদমাধ্যমকে খবর দিয়েছেন কমিউনিটি ওয়ার্কাররা।
জানা গিয়েছে, সাধারণত মা, চাচী ও দাদীরা গরম পাথর কিশোরীর বুকে চেপে বারবার আয়রন করেন যাতে টিস্যুগুলি ভেঙে গিয়ে বৃদ্ধি পিছিয়ে দেয়। এক কমিউনিটি ওয়ার্কার জানিয়েছেন, দক্ষিণ লন্ডনে সম্প্রতি ১৫–২০টি এমন ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ দায়ের না হলেও এমন ঘটনা ব্রিটেনেও ঘটছে বলে তারা সন্দেহ করছে। কিশোরীদের সুরক্ষার নামে এই পদ্ধতিকে শিশু নিগ্রহ হিসেবেই চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এবং নির্যাতিতরা একে শিশু নির্যাতনের একটি অংশ হিসেবেই মনে করে যা শারীরিক ও মানসিক আঘাত, সংক্রমণ এবং পরবর্তীতে বুকের দুধ খাওয়ানোর অক্ষমতা, বিকৃতি এবং স্তন ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
এক সমাজকর্মী জানান যে, তিনি দক্ষিণ লন্ডনের ক্রোডন শহরে ১৫ থেকে ২০ টি এমনই সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘সাধারণত বিদেশের অন্য জায়গায় মহিলাদের যৌনাঙ্গ ছেদন করা হয়। তবে এখানে তেমন শোনা যায় না।’ তিনি জানান, এই প্রথায় মেয়েদের গরম পাথর দিয়ে স্তন ঘষে দেয়া হয় যাতে স্তনের টিস্যু ভেঙে যায় এবং স্তনের বৃদ্ধি ধীরে ধীরে হয়। তিনি আরও জানান, ‘কখনও কখনও তারা সপ্তাহে একবার বা দু’সপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন।’
নারী এবং মেয়েদের উন্নয়ন সংস্থার প্রধান মার্গারেট ন্যুডজেউইরা জানান যে, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের অন্তত ১০০০ জন নারী ও মেয়েদের ওপরে এই প্রথা চাপানো হচ্ছে বলেই খবর। কিন্তু কোনও পদ্ধতিমূলক গবেষণা বা আনুষ্ঠানিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি এখনও।
ব্রিটিশ–সোমালি অ্যান্টি–এফজিএম প্রচারণা সদস্য ও মনোবিজ্ঞানী লয়লা হুসেন জানান যে, তিনি উত্তর লন্ডনের একটি ক্লিনিকে পাঁচজন মহিলার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। যাদের এভাবেই স্তন ইস্ত্রি করে দেওয়া হয়েছে। লয়লা হুসেন বলেন, ‘তারা সবাই ব্রিটিশ নাগরিক এবং এই কাজের ফলে একজন মহিলার স্তন সমতল হয়েও পড়ে।’ যদিও পুলিস জানিয়েছে, তাদের কাছে ব্রিটেনের ব্রেস্ট আইরনিং সম্পর্কিত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।