এবার গণমাধ্যম প্রচারণায় আওয়ামী লীগ
হাসিবুল হাসান: আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণায় আবারো নতুনত্ব আনছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।নির্বাচনের আগে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারে সব ধরনের গণমাধ্যমে (মুদ্রণ, সম্প্রচার, অনলাইন, সামাজিক নেটওয়ার্ক) প্রচারণা চালাবে তারা। একই সঙ্গে তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রিজি) প্রযুক্তির মাধ্যমেও নির্বাচনী প্রচার চালানোর কথাও ভাবছে দলটি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের প্রচার উপ-কমিটি এবং দলের পক্ষে গবেষণার কাজে নিয়োজিত ‘সেন্টার ফর রিচার্স অ্যান্ড ইনফরমেশন’ (সিআরআই) এর এক যৌথ বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রচার উপ-কমিটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র রেজওয়ান সিদ্দিক ববি (শেখ রেহানার ছেলে) প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাবের হোসেন চৌধুরী, প্রচার উপ-কমিটির সদস্য আনিস আহমেদসহ সিআরআইয়ের পরিচালক ও প্রচার উপ-কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মোট ২৭ জন অংশ নেন বলে সূত্রে জানা যায়।
বৈঠক সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে সরকারের সাফল্য তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।সম্ভব হলে দেশের প্রতিটি টিভি চ্যানেলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সরকারের সাফল্য তুলে ধরে নির্বাচনী প্রচার চালানোরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।একই সঙ্গে প্রিন্ট মিডিয়াতেও সরকারের এসব সাফল্য প্রচার করা হবে। এছাড়া অনলাইনে সরকারের বিভিন্ন অপপ্রচারের জবাব দিতে দলের প্রচারণা সেলকে আরো শক্তিশালী করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সারাদেশের জেলা পর্যায়ের প্রচার সম্পাদকদের নিয়ে কর্মশালা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই কর্মশালায় জেলার প্রচার সম্পাদকদের আগামী নির্বাচনে প্রচারের কৌশল নিয়ে প্রশিক্ষণ ও গাইড লাইন দেয়া হবে।
এছাড়াও সরকার ও দলের নেতিবাচক সমালোচনার জবাব দিতে ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এতে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বস্থানীয় নেতা এবং আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা এতে অংশ নেবেন। বিভিন্ন টিতিতে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
বৈঠক সূত্র আরো জানায়, প্রচারে সমন্বয়, নতুনত্ব এবং কৌশল প্রণয়নের লক্ষ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সারাদেমে ডিজিটাল ব্যানার দিয়ে প্রচার চালানো, নির্বাচনী প্রচারে সরকারের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি গত দুই বছরে জামায়াত-বিএনপির সহিংসতা, আওয়ামী লীগের পাঁচ বছরে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম এবং বিএনপি-জামায়াতের পাঁচ বছরের কার্যক্রম তুলে ধরা, ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের বাস্তবায়নের চিত্র ও পরিসংখ্যান, সুশীল সমাজ ও টক-শোতে নেতিবাচক আলোচনার ফলে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তির জবাব দেয়ার জন্য ‘লেটস টক’ আদলে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী, জেলার প্রচার সম্পাদকদের কর্মশালায় প্রশিক্ষণ ও গাইড লাইনের পাশাপাশি নির্বাচনী উপকরণও সরবরাহ করা হবে যাতে তারা থানা পর্যায়ের প্রচার সম্পাদকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ, প্রশিক্ষণ এবং গাইড লাইন দিতে পারেন। বৈঠকে কিছু নমুনা পোস্টার এবং বিলবোর্ডও দেখানো হয়।