ব্রিটেনে ‘কার্বন শোষণে’ নতুন যন্ত্রের ব্যবহার
বিশ্বের সার্বিক পরিবেশ রক্ষার্থে ব্রিটেনে নতুন এক আবিস্কারের খবর পাওয়া গেছে। বায়ুমণ্ডলকে অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে বাঁচাতে ইউরোপে শুরু হয়েছে কার্বন শোষণ পদ্ধতি। দেশটি প্রথমবারের মতো গ্রহণ করেছে ‘ড্রাক্স’ সিস্টেম নামে এক পদ্ধতি। কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের বরাতে করা প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিরিক্ত কাঠ জ্বালানোর ফলে বাতাসে যে পরিমাণ বাড়তি কার্বন মিশে যায়, তাকে শোষণ করার মাধ্যমে পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ভারসাম্য বজায় রাখার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ব্রিটেন। গোটা ইউরোপ তাদের এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে।
ব্রিটেনের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলোর মধ্যে এই ড্রাক্স সিস্টেম। প্রতিদিন প্রায় সাত লক্ষাধিক টন কাঠের টুকরো জ্বালানোর মাধ্যমে গোটা দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের পরিমাণ যথাযথ রাখতে এটি সাহায্য করে। এবার সেই একই প্রযুক্তির ভিন্নতর প্রয়োগকে কাজে লাগাতে যাচ্ছে ব্রিটেন।
অর্থাৎ, এখানে কার্বন উৎপাদনের পরিবর্তে কার্বন শোষণ। লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি দল তৈরি করেছেন এই বিপরীত প্রযুক্তিটি। অ্যামাইন নামে এক ধরনের জৈব রাসায়নিক যৌগ ব্যবহারের মাধ্যমে তৈরি হয় এই সিস্টেম।
ব্রিটিশ গবেষকরদের দাবি, অ্যামাইন খুব সহজেই বাতাস থেকে কার্বন শোষণ করতে পারে এবং এর শোষণ ক্ষমতাও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। সি-ক্যাপচার অর্থাৎ কার্বন ক্যাপচার নামের এই নতুন প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয়েছে জৈব দ্রবণ, যাতে বিষাক্ত প্রভাব খানিকটা মৃদু হয়ে যায় এবং কাজ হয় ভীষণ মসৃণভাবে। ড্রাক্সের প্রধান কাজ হলো, কাঠ পোড়ানো বা জঙ্গলে কোনো রকমভাবে অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি হলে, বাতাসের সেই বাড়তি দূষণকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা।
এ দিকে ‘ড্রাক্স’ পাওয়ার সিস্টেমের সিইও অ্যান্ডি কসের বলছেন, ‘এই প্রকল্প এখনও অনেক ছোট আকারে রয়েছে। সেখান থেকেই আমরা কাজ শুরু করছি। সবুজায়নের লক্ষ্যে এটা বড় পদক্ষেপ। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রযুক্তি।’
অপরদিকে প্রকল্পের অন্যান্য গবেষকরা হিসেবনিকাশ করে বলছেন, ‘আমরা আগামী দিনে এর বাণিজ্যকরণে আগ্রহী। যদি খুব ভালোভাবে কার্বন ক্যাপচার ব্যবহার করা যায়, তাহলে বছরে গড়ে বিশ্বের উষ্ণতা কমতে পারে দেড় ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মতো।’