বিমানের ছিনতাই চেষ্টা ব্যর্থ: কমান্ডো অভিযানে ছিনতাইকারী নিহত
আজ রোববার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের ছিনতাই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কমান্ডোদের অভিযানের সময় বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী যুবক মাহাদী নিহত হয়েছে বলে এক সেনা কর্মকর্তা ব্রিফিংয়ে জানান। তার কাছে একটি পিস্তল ছিল বলেও জানা গেছে।
সর্বশেষ প্রেস বিফ্রিংয়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সেনাবাহিনীর বিশেষ কমান্ডো টিমের সঙ্গে র্যাব, পুলিশের সম্মিলিত অভিযানে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী অস্ত্রধারীর মৃত্যু হয়েছে। কমান্ডো অভিযানে নেতৃত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরুল। তিনি আরও জানান, যাত্রী ও ক্রু রা সবাই অক্ষত অবস্থায় নেমে এসেছেন। কেবিন ক্রুদের জিম্মি করা হয়েছিল। তবে ছিনতাইকারী কোনো যাত্রীর কোনো ক্ষতি করেনি। প্রথমে ধারণা করা হচ্ছিল সে বিদেশী। কিন্তু পরে দেখা গেলে, সে বাংলাদেশী। তার হাতে একটি অস্ত্র ছিল পিস্তল। তার বয়স ২৫ থেকে ২৬ বছর। ছিনতাইকারীকে নিবৃত্ত করার জন্য কমান্ডো বাহিনী প্রথমে তাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করে। এসময় স্বাভাবিকভাবে যা হওয়ার কথা, তাই হয়েছে। গোলাগুলীতে প্রথমে সে আহত হয়। পরে সে মারা যায়। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বিমানটি বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেটাকে ঘিরে ফেলে। পরে ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর বিশেষ কমান্ডো টিমকে জানানো হয়। তারা দ্রুততম সময়ে উপস্থিত হন। পরে সবার সমন্বয়ে অভিযান চালানো হয়।
বিমানবন্দর সূএের খবর, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ময়ুরপংকী নামের (বোয়িং ৭৩৭-৮০০) একটি বিমান আজ রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার পর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করে। বিমানের ফ্লাইট ১৪৭ এ ১৪২ জন যাএী ও ৭ জন ক্রু ছিল। ফ্লাইটটি বিকাল ৫টায় ঢাকা থেকে ছাড়ে। জরুরী অবতরণের পর প্রথমে পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস বিমানটি ঘিরে ফেলে। এরপর সকল যাএী পাইলট, কো পাইলট,কিছু ক্রু নিরাপদে নেমে আসে। পরে সেনা,বিমান ও নৌবাহিনীর কমান্ডোরা বিমানের চারপাশে অবস্থান নেয়। ধারণা করা হচেছ, বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। ঘটনার পর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ হয়ে যায়। বিমানবন্দরের আশেপাশের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয় নিরাপওার স্বার্থে। বিমানবন্দরের টার্মিনালের ভিতরে কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হলে দেখা দেয় উৎকণ্ঠা।
বিমানবন্দর সূএ জানায়, ঢাকা থেকে বিমানটি উড়ার পর এক যুবক নানা ভাবে হুমকিধমকি দিয়ে পাইলটের সাথে দেখা করতে চান। পরে সে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার দাবি জানায়। বিমান ছিনতাইয়ের হুমকি ধমকি দেন। পাইলট কৌশলে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে খবরটি জানিয়ে বিমানটি জরুরী অবতরণ করান।
বাংলাদেশ বিমানের সূত্র জানিয়েছে, ১৬২ আসনের বিমানটিতে ইকোনমি ক্লাসে ১৩৩ জন ও বিজনেস ক্লাসে নয়জন যাত্রী ছিলেন। এ ছাড়া পাঁচজন ক্রু, এর মধ্যে দুজন নারী ছিলেন। ককপিটে দুজন পাইলট ছিলেন। বিমানটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। বিমানটি ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার পর এক যুবক ভয়ভীতি দেখানো শুরু করে। তখন পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বিমানটির কেবিন ক্রুরা সাংকেতিকভাবে পাইলট গোলাম শাফিকে বিষয়টি অবহিত করেন। তখন পাইলট সিকিউরিটি প্রসিডিউর অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। পরবর্তীতে পাইলট বিমানটি চট্টগ্রামে অবতরণ করান।