‘সাহসী নারী’র পুরস্কার নিলেন রোহিঙ্গা রাজিয়া
নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষায় সাহসিকতা নিয়ে কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে রোহিঙ্গা পরিবারের এক নারীকে বৃহস্পতিবার পুরস্কৃত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বের আরও ৯ নারীর সঙ্গে বাংলাদেশি রাজিয়া সুলতানাকে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ (আইডব্লিউসি) ২০১৯’ পুরস্কার দেওয়া হয়।
‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য তার নির্ভীক উদ্যোগ, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবাধিকার সুরক্ষার প্রচেষ্টা এবং রোহিঙ্গা নারীদের ওপর পদ্ধতিগতভাবে যৌন নিপীড়নের ঘটনা নথিবদ্ধ করার জন্য এই পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে রাজিয়াকে’, রাজিয়াকে পুরস্কার দেওয়া প্রসঙ্গে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে বিজয়ী ১০ নারীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।
রাজিয়াকে ‘বাংলাদেশি রোহিঙ্গা আইনজীবী, যিনি রোহিঙ্গা নারীদের পাচারের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য লড়ছেন’, বলে উল্লেখ করেন মাইক পম্পেও। মানবাধিকার ও নারী অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য সারা বিশ্ব থেকে প্রতি বছর নির্বাচিত নারীদের যুক্তরাষ্ট্র এই পুরস্কার দিয়ে থাকে। ২০০৭ সালে শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৬৫টি দেশের ১২০ নারী এই পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর আর্ন্তজাতিক নারী দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে থাকে।
‘আমরা নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে সবাই জানি যে, সাহসী নারীরা সব জায়গাতেই আছেন এবং সব জায়গাতেই তাদের প্রয়োজন’, অনুষ্ঠানে বলেন মাইক পম্পেও। ‘যদিও তাদের বেশিরভাগকে কখনো সম্মানিত করা হবে না’, যোগ করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরে রাজিয়া সুলতানার জন্ম বলে জানায় পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইট। এতে বলা হয়, পেশায় আইনজীবী রাজিয়া তার জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেছেন একজন শিক্ষক ও মানবাধিকার কর্মী হিসেবে। ২০১৪ সাল থেকে তিনি সরাসরি রোহিঙ্গা নারীদের নিয়ে কাজ করছেন।
২০১৬ সাল থেকে তিনি ধর্ষণ ও মানবপাচারের শিকার রোহিঙ্গা নারীদের সাক্ষাৎকার নথিবদ্ধ করা শুরু করেন এবং রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়নের ঘটনার তথ্য নিয়ে ‘উইটনেস অব হরর’ এবং ‘রেপ বাই কমান্ড’ নামে দু’টি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। রাজিয়া ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন-এর একজন সমন্বয়ক ও আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অরগানাইজেশন-এর নারী বিভাগের পরিচালক। সূত্র– বেনারনিউজ ডটঅর্গ ও ইউপিআই।