ব্রেক্সিট ইস্যুতে আবারও হারলেন তেরেসা মে
ব্রেক্সিট ইস্যুতে আবার নাকাল বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। আবারও পার্লামেন্টে তার ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এ নিয়ে পর পর দু’বার একই পরিণতি ভোগ করতে হলো তাকে। বৃটেনের ইতিহাসে এমনটা আগে কখনো হয়েছে কিনা তা গবেষণার বিষয়। ঐতিহাসিক ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন নিজের দল কনজার্ভেটিভ পার্টির অনেক এমপি।
জানুয়ারিতে শোচনীয়ভাবে তিনি এ চুক্তি ভোটে দিয়ে হেরে যান। এরপর সংশোধিত আকারে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে চুক্তির খসড়া উত্থাপন করা হয়। তার আগে তিনি এই চুক্তির পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য এমপিদের প্রতি আহ্বান জানান। কিন্তু সেই আহ্বানে সাড়া দেন নি সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
জানুয়ারিতে প্রথমবার ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর আবার শুরু হয় নতুন করে দেনদরবার। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে দীর্ঘ দেনদরবার করে জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যে খসড়া চুক্তি তিনি চূড়ান্ত করেছিলেন, তার প্রতি সমর্থন আদায়ে দ্বিতীয়বারের মতো তা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংসদের সামনে পেশ করেছিলেন।
বিবিসি লিখেছে, কিন্তু সেটি ৩৯১-২৪২ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে সংসদে। অর্থাৎ ১৪৯ ভোটের বিশাল ব্যবধানে হেরে গেছে তেরেসা মে’র খসড়া চুক্তি। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে তার প্রথম প্রয়াস চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছিল। প্রথমবার যে ব্যবধানে তার চুক্তিটি প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল, তার নজির বৃটিশ সংসদে নেই। তার নিজের রক্ষণশীল দলেরই ১১৮জন এমপি ওই চুক্তির বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।
তারপর গত কয়েক সপ্তাহ ইইউ নেতাদের সাথে নতুন দেন-দরবার করে কিছুটা পরিবর্তিত আকারে চুক্তিটি আবার সংসদে এনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিটের পর উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রের মধ্যে অবাধে পণ্য এবং মানুষের যাতায়াত অব্যাহত রাখা নিয়ে যে আপত্তি অনেকে করছিলেন, সেখানে ইইউ থেকে তিনি কিছুটা ছাড় পেয়েছেন। বলা হচ্ছে, এই দুই ভূখণ্ডের মধ্যে অবাধ যাতায়াত হবে সাময়িক।
তবে প্রধানমন্ত্রী বলছেন এখন এমপিরা আরেকটি ভোট দেবেন যে, কোন চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত কি-না তার ওপর এবং তাও যদি অনুমোদন না পায় তাহলে ব্রেক্সিট বিলম্বিত করা উচিত কি-না সে বিষয়ে ভোট হবে। তবে বিরোধী লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এখন উচিত সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করা।
এর আগে এমপিদের সতর্ক করে তেরেসা মে বলেছিলেন যে, তার প্রস্তাবে সমর্থন না দিলে তাতে ব্রেক্সিট না হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কিন্তু এতো কিছুর পরেও প্রয়োজনীয় সমর্থন পেতে ব্যর্থ হলেন তিনি।