এটি ইতিহাসের অন্যতম কালো দিন: নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার ঘটনাটিকে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে অন্যতম কালো দিন বলে আখ্যা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। ঘটনার কিছুক্ষণ পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর একটা ৪০ মিনিটে ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে প্রচুর হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন সহিংস কর্মকান্ড’ বলে উল্লেখ করে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ‘দুষ্কৃতিকারীদের কোনো জায়গা নেই’। তিনি বলেন, অভিবাসী, শরণার্থীসহ হামলার শিকার হওয়া সবাই নিউজিল্যান্ডের অংশ, কিন্তু দুষ্কৃিতকারীরা নয়। নিউজিল্যান্ডের সমাজে এ ধরনের সহিংস হামলার কোনো জায়গা নেই বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন জাসিন্ডা।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাধিক জায়গায় চলমান হামলার ঘটনা মোকাবেলা করছি আমরা। কিন্তু এটা নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে অন্যতম কালো দিন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, এ বক্তব্য দেয়ার সময় কষ্ট করে কান্না আটকে রেখেছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস অ্যাভিনিউতে আল নুর মসজিদ এবং লিনউডের আরেকটি মসজিদের কাছ থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ পর্যন্ত নিহতের যে সব সংখ্যা বলা হচ্ছে, তাতে সর্বোচ্চ ২৯-এর কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। হামলার অভিযোগে স্থানীয় পুলিশ এরইমধ্যে সন্দেহভাজন এক নারীসহ চারজনকে বন্দুকধারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবারের ওই হামলার ব্যাপাকে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে তারা ক্রাইস্টচার্চের লোকজনকে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকি ‘নিউজিল্যান্ডের কোথাও’ কোনো মসজিদে না যেতেও মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। শহরের সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় এক টিভি সাংবাদিক বলেন, একজন ব্যক্তি একটি অটোমেটিক বন্দুক নিয়ে আল নূর মসজিদে প্রবেশ করে এবং গুলি শুরু করে। তিনি বলেন, কালো পোশাক ও হেলমেট পরিহিত ওই বন্দুকধারী একটি মেশিনগান বহন করছিল। তিনি জানান, ওই ব্যক্তি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়।
অন্যদিকে আল নূর মসজিদের পাশেই লিনউড মসজিদেও হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ। ওই হামলাকারীদের একজন অস্ট্রেলিয়ান বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম ওটাগো ডেইলি টাইমস। তারা জানাচ্ছে, হামলার আগে ওই ব্যক্তি তার উদ্দেশ্য বর্ণনা করে ৩৭ পাতার ঘোষণাপত্র লিখেছে।
হামলার ঘটনার সময় আশেপাশেই ছিলেন বাংলাদেশ টিমের বেশ কয়েকজন সদস্য। হামলার ঘটনার পর তারা দ্রুত টিম বাসে চলে আসেন। এ সময় তাদের পাশে নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়নি। বাসে ঢুকেও তামিম, তাইজুলরা অনেকক্ষণ মাথা নিচু করে বসেছিলেন। কারণ তখনও বাইরে থেকে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছিল।
এদিকে এ ঘটনায় নিউজিল্যান্ডে টেস্ট সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। এখন বাংলাদেশ টিম যত শীঘ্রসম্ভব দেশে এসে পৌঁছাবে।