একাত্তরের অপরাধীদের রায় অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন
বিএনপির সাথে সম্পৃক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো আহ্বান জানালেন, ‘একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের পে আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। এ বিচারব্যবস্থাকে দলীয় কর্মসূচির ঊর্ধ্বে রাখুন। কারণ, একাত্তর সালে ওরা সামনে পেলে আপনাদেরকেও রেহাই দিত না। জাতিরজনকের ডাকে সাড়া দিয়ে একাত্তরে জীবনবাজি রেখে যে দেশটি আপনারা স্বাধীন করেছেন, তার অস্তিত্ব রার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ ‘বিএনপি প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছে একাত্তরের ঘাতক এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের রায়। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা কখনো বিএনপির এমন কাজে সমর্থন দিতে পারেন না’ মন্তব্য শেখ হাসিনার।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক কল্যাণে নিয়োজিত ‘যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’-এর একটি প্রতিনিধিদল গত বুধবার অপরাহ্নে নিউ ইয়র্কে গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর স্যুইটে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার শুরু এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানীভাতা বৃদ্ধি ও চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক পদক্ষেপের জন্য শেখ হাসিনাকে একটি ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এটি হস্তান্তর করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্যসচিব আব্দুল মুকিত চৌধুরী। আধ ঘণ্টার বেশি সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রধানমন্ত্রী খোলামেলা আলোচনা করেন। সামনের নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মহাজোট প্রার্থীদের বিজয়ে প্রবাস থেকে সাধ্যমতো সহায়তার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘একাত্তরের ঘাতক এবং তাদের দোসররা মহাজোট সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় বিপুল অর্থ ঢালছে বিভিন্ন মহলে। এ ধরনের অপপ্রচারণা রোধে মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবার-পরিজন, বিশেষ করে প্রবাসে বড় হওয়া প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সামনের নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত এবং বিভিন্ন পর্যায়ে উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতেই আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটকে জয়ী করতে হবে। এ জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিটি প্রবাসীকে একাত্তরের চেতনায় সঙ্ঘবদ্ধ হতে হবে।’
প্রতিনিধিদলে ছিলেন কমান্ডার নূরনবী, আব্দুল মুকিত চৌধুরী, মাহবুবুর রহমান, আবুল মনসুর খান, শফিকুল ইসলাম, রাশেদ আহমেদ, লাবলু আনসার, মোজাহিদুল ইসলাম, আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন এ বৈঠকের সমন্বয় করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত ড. এ কে এ মোমেন সেখানে ছিলেন। এর পরই শেখ হাসিনা জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির জন্য সম্প্রতি ক্রয় করা বাসভবন পরিদর্শন করেন। সেখানে রাষ্ট্রদূত ড. এ কে এ মোমেনের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ও প্রবাসের বিশিষ্টজনেরাও ছিলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের ভবন কেনার কী হলো। পাশে বসা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ভবন খোঁজা হচ্ছে। চার-পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় হলেই সেটি ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে। যদিও নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল মো: মনিরুল ইসলাম ইতঃপূর্বে মিডিয়াকে অবহিত করেন যে, নিজস্ব ভবন ক্রয়ের কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি। নিউ ইয়র্ক অঞ্চলে তিন লাধিক বাংলাদেশীর বহু পুরনো দাবি হচ্ছে কন্সুলেটের নিজস্ব ভবন ক্রয়ের মধ্য দিয়ে ‘বাংলাদেশ সেন্টার’ স্থাপনের। -এনা নিউ ইয়র্ক