নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্ট সালাম দিয়ে শুরু, নামাজ দিয়ে শেষ
ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে নৃশংসতার পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্নের দরদি চেহারা বিশ্ব দেখেছে। হতাহতের ঘটনায় শোকার্ত মুসলিমদের তিনি বুকে টেনে নিয়েছেন। অভয় দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা তোমাদের শোকের সাথী হয়তো হতে পারব না। কিন্তু, কথা দিচ্ছি, একসঙ্গে আমরা অনেকটা পথ হাঁটব।’
শুরু থেকেই পোশাকেও জেসিন্ডা থেকেছেন নির্মোহ। নিজেদের সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে মুসলিম কমিউনিটিতে হাজির হয়েছেন মাথা ঢেকে। মঙ্গলবার জেসিন্ডার দরদি মানবতার আরেক চেহারাও দেখল বিশ্ব। গত ১৫ মার্চের নৃশংসতার স্মরণে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে জাসিন্ডা তার বক্তব্য শুরুই করেন আরবিতে, ‘আসসালামু আলাইকুম (অর্থ: আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)’ বলে।
শুধু তাই নয়, এদিন নিউজিল্যান্ডে বসবাসকারী মুসলিম ছাড়াও অন্য বিশ্বাসের অনুসারিদের সংসদে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিরা নিজ ধর্মের বেশে সংসদে প্রবেশ করেন। পরে প্রথমে মুসলিমদের জন্য সংসদে নামাজের ব্যবস্থা করে দেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন। এরপর বাকি ধর্মের অনুসারিরাও প্রার্থনা করেন।
৩৮ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী পরিচিত শোকের কালো পোশাক পরে সংসদে আসেন। তিনি বক্তব্য শেষ করেন, ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু (অর্থ: আপনার উপরও শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)’ বলে। এরপর প্রধানমন্ত্রী উঠে গিয়ে সংসদে আসা মুসলিমদের সঙ্গে গত ১৫ মার্চ মসজিদে হতাহতের ঘটনায় সমবেদনা প্রকাশ করেন। মুসলিম নারীদের বুকে টেনে নেন।
স্পিকার ট্রেভর মালার্ড বিভিন্ন ধর্মের বিশ্বাসীদের এই বিশেষ অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানান। তারা নিজ নিজ ধর্মীয় পোশাকে সংসদে এসে পরে প্রার্থনাও করেন। কিন্তু, সর্বপ্রথম মুসলিমদের নামায আদায় করতে দেওয়া হয়। পরে অন্য ধর্মের অনুসারিরা তাদের প্রার্থনা করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ জুমার নামাযের সময় ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর ও লিনউড মসজিদে বন্দুকধারী নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৫০ জন নিহত ও ৬০ জন আহন হন। হামলাকারী অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ব্রেনটন টারান্ট আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায় এবং হামলার ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ করে। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।