ব্রেক্সিট ঠেকাতে ফের গণভোট’র দাবিতে উত্তাল ব্রিটেন
প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র পদত্যাগ দাবি
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া ঠেকাতে বিক্ষোভে উত্তাল লন্ডন। গতকাল শনিবার সারাদেশ থেকে লন্ডনে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। তারা দ্বিতীয় গণভোট এবং প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র পদত্যাগের দাবি জানান। বিক্ষোভে দশ লাখের বেশি লোকের সমাগম ঘটে। তারা পার্লামেন্ট স্কয়ারের সামনে সমাবেশ করেন। এরই মধ্যে ব্রেক্সিটপন্থিরাও পাল্টা বিক্ষোভ করেছেন।
লেবার পার্টির উপ-প্রধান সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন। সমাবেশে বামপন্থী কয়েকটি সংগঠন জোটবদ্ধ হয়ে অংশ নিয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল দুপুরে সেন্ট্রাল লন্ডনের পার্ক লেনে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। তারা একটি র্যালি নিয়ে পার্লামেন্টের দিকে এগিয়ে যান। তারা বলেছেন, ব্রেক্সিট কার্যকর হবে কিনা তা জানতে দ্বিতীয় গণভোট দিতে হবে। এই ইস্যুটি সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র পদত্যাগ দাবি জানান তারা।
সমাবেশে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র বিভ্রান্তিকর পথ কার্যত ব্রেক্সিট বাস্তবায়নকে ব্যর্থ করেছে। এখন দ্বিতীয় গণভোট ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। টাইম পত্রিকা প্রতিবেদনে ডাউন স্ট্রিটের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মে’র পদত্যাগের বিষয়ে ভেতরে ভেতরে আলোচনা চলছে। যদিও ডাউনিং স্ট্রিট সেই তথ্য অস্বীকার করেছে। লেবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা ভিন্সে ক্যাবল জানিয়েছেন, আজকের সমাবেশ অনেক বড়। সারা দেশ থেকে লোকজন এসেছেন। সমাবেশের আয়োজন করা মারিয়েলা ফ্রস্ট্রাপ এবং রিচার্ড বেকন এক পর্যায়ে পার্লামেন্ট স্কয়ারে ঘোষণা দেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বিক্ষোভের মধ্যেই অনলাইনে চলছে ব্রেক্সিট বিরোধী স্বাক্ষর অভিযান। প্রায় ৪৩ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। এর উদ্যোক্তা মার্গারেট জর্জিওডো জানিয়েছেন, তিনি ফোন এবং ফেসবুকে তিনবার হত্যার হুমকি পেয়েছেন।
লেবারেল ডেমোক্র্যাট এমপি লায়েলা মোরান বলেছেন, এত মানুষের স্বাক্ষর ব্রেক্সিট বিরোধী প্রচারণায় নতুন জীবন দিয়েছে। বিক্ষোভে মেয়র সাদিক খান, লেবারের উপনেতা টম ওয়াটসন, স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজিওন, সাবেক টোরি দলের এমপি অ্যানা সৌবেরি (বর্তমানে স্বতন্ত্র) এবং সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ডোমিনিক গ্রিয়েভ প্রমুখ যোগ দিয়েছেন। এদিকে এক সপ্তাহ আগে সুন্ডারল্যান্ডে ব্রেক্সিটপন্থিদের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। গতকাল তারা লন্ডনে আসতে শুরু করেছে।
সাবেক ইউকিপ নেতা নাইজেল ফারাজি এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তিনি জানান, দুই শতাধিক ব্রেক্সিট সমর্থক অংশ নিয়েছেন বিক্ষোভে। শুক্রবার ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর করতে ব্রিটেনকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে চলতি সপ্তাহে পার্লামেন্টে চুক্তিটি পাস হলে ২২ মে পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার কথা জানায় ইইউ। ২৯ মার্চের মধ্যে ব্রেক্সিট কার্যকর করার কথা ছিল। ২০১৬ সালে এক গণভোটে ইইউ ছাড়তে ভোট দিয়েছিলেন ব্রিটিশরা।