ব্রেক্সিট নিয়ে জটিলতা
যুক্তরাজ্যের সামনে এখন তিন পথ খোলা
পার্লামেন্টে চতুর্থ দফায় ভোটাভুটির চেষ্টা থেরেসার | ১২ এপ্রিল সম্পর্কোচ্ছেদ অনিবার্য
তৃতীয়বারের মতো ব্রেক্সিট বা যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র চুক্তি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর দেশটির পার্লামেন্টে কার্যত অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন প্রস্তাবের ওপর কয়েক দফা ভোটের মাধ্যমেই কি যুক্তরাজ্যের ইইউ ছাড়ার এই সংকটের সমাধান হবে? যদিও এরই মধ্যে ইঙ্গিত-সূচক ভোটের এক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি ঐকমত্যে পৌঁছার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটাও ব্যর্থ হয়েছে।
আগামী সোমবার পার্লামেন্টে চতুর্থবারের মতো ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর প্রক্রিয়াও আগেরবারের মতোই হবে। এমপিরা স্পিকারের কাছে নিজেদের প্রস্তাব জমা দিতে পারবেন। এরপর স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন কোন্ প্রস্তাবের ওপর ভোট হবে, আর কোন্টিতে নয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাওয়া মোট তিনটি প্রস্তাবই তোলা হবে। এছাড়া যুক্তরাজ্যের সামনে এখন যেসব বিকল্প রয়েছে-
১২ এপ্রিল চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট: আগামী সোমবার চুক্তিটি পাস না হলে কিংবা ঐকমত্যে না পৌঁছালে কোনো চুক্তি ছাড়াই ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে যুক্তরাজ্য। আগামী ১২ এপ্রিল ব্রাসেলসের সঙ্গে লন্ডনের সম্পর্কোচ্ছেদ অনেকটা অনিবার্য হয়ে পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্রিটেনকে কোনো চুক্তি ছাড়াই মহাদেশীয় জোট থেকে বিদায় নিতে হতে পারে বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশন (ইসি)। এক বিবৃতিতে ইসি বলেছে, কোনো চুক্তি ছাড়াই (নো-ডিল) ১২ এপ্রিল এখন সম্ভাব্য দৃশ্যপট হয়ে পড়েছে। এজন্য ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ইইউ প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১২ এপ্রিল রাতে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের জন্য ইইউ সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এতে দু’পক্ষের ওপরই অর্থনৈতিক আঘাত নেমে আসতে পারে। ঝুঁকি প্রশমনে প্রস্তুতি সত্ত্বেও সীমান্তের তলস্নাশি চৌকিগুলোতে মারাত্মক বিলম্ব ঘটতে পারে। এদিকে, চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের কথা থেরেসাও উড়িয়ে দেননি। যদিও এমপিরা এ যাবত চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের ব্যাপারে ভোট দিয়ে এসেছেন।
ব্রেক্সিট বন্ধ: এখন পর্যন্ত যেসব সম্ভাবনার কথা ভাবা হচ্ছে, তার শেষ মাথায় রয়েছে ব্রেক্সিট বন্ধ করে দেয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদের জন্য একটি দ্বিতীয় গণভোটের জন্য পাঁচ থেকে ১০ লাখ লোক সড়কে নেমে আসতে পারেন। ইউরোপীয় ‘কোর্ট অব জাস্টিস’ জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য এককভাবেই অনুচ্ছেদ ৫০ বাতিল ঘোষণা করতে পারে।
সাধারণ নির্বাচন: যদি পার্লামেন্ট ও সরকারের মধ্যে অচলাবস্থা চলতেই থাকে, তবে একটি সাধারণ নির্বাচনের ডাক দিতে পারেন থেরেসা মে। এতে নতুন করে পার্লামেন্ট গঠন করা হবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার শক্তিশালী প্রশাসন গড়তে পারবে।