সরকার ভারতীয় আধিপত্যের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে : লংমার্চে বক্তারা
সরকার ভারতীয় আধিপত্যের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তেল গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প আছে, অনেক স্থান রয়েছে। সেই বিকল্প পথে না গিয়ে সরকার ভারতীয় আধিপত্যের তাবেদারি করে সুন্দরবন ধ্বংসের পায়তারা করছে।
সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল এবং জাতীয় কমিটি ঘোষিত সাতদফা বাস্তবায়নের দাবিতে বাগেরহাটের রামপাল অভিমুখে লংমার্চের পথে যশোরের নওয়াপাড়া ও খুলনার ফুলতলায় দু’টি সভায় তিনি একথা বলেন। সকাল নয়টায় যশোর শহর ত্যাগ করার পর লংমার্চ দুপুর দুইটার দিকে দৌলতপুর প্রবেশ করে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে লংমার্চ শুরু হয়। আগামীকাল বাগেরহাটের চুলকাঠিতে সুন্দরবন ঘোষণার মাধ্যমে লংমার্চ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। নওয়াপাড়া ও খুলনার পথসভায় স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শেখ শহিদুল্লাহ বলেন, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি) নিজের দেশের তিনটি রাজ্যেই এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে গিয়ে প্রত্যাখাত হয়েছে। সেই এনটিপিসি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে সুন্দরবন ধ্বংসের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দেশের মানুষকে সচেতন হতে হবে, দেশের স্বার্থ বিবেচনা করেতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প প্রসঙ্গে শেখ শহিদুল্লাহ বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট নিরসনের নামে, দেশী-বিদেশী লুটেরাগোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে সরকার বারবার দেশের জন্য সর্বনাশা পথ গ্রহণ করছে। আমরা বিদ্যুৎ সংকট সমাধান চাই। বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের টেকসই ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের হিসাব ও পরামর্শ অনুযায়ী খুব অল্প সময় ও ব্যয়ে বর্তমানে ৪৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ঘাটতি নিবারণ করে বেশ কিছু বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। দ্রুত পুরোনো বিদ্যুৎ উৎপাদনগুলোকে নবায়ন করতে হবে। লোড ব্যবস্থাপনা ও সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। লংমার্চে আসা আন্দোলনকারীরা স্থানীয় লোকজনের কাছে ক্ষতিকর বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে সচেতন করতে বুকলেট ও লিফলেট বিলি করে। লংমার্চের কর্মসূচি আজ খুলনায় জনসভা ও রাত্রিযাপন। আগামীকাল বাগেরহাট, কাটাখালী, চুলকাঠিতে পথসভা শেষে সুন্দরবনের দিগরাজে সমাপনী জনসভা ও সুন্দরবন ঘোষণা। পথে পথে গান, নাটক, প্রদর্শনী।