রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা: ব্রিটিশ মন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্রিটিশ মন্ত্রীর সাক্ষাৎ
স্বার্থান্বেষীরা রোহিঙ্গাদের খারাপ কাজে ব্যবহার করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা হতাশাগ্রস্ত স্বার্থান্বেষী মহল তাদেরকে খারাপ কাজে ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার যুক্তরাজ্যের এশিয়া-প্যাসিফিক বিষয়ক মন্ত্রী মার্ক ফিল্ড প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা এখানে এসেছে। তাদের কাজকর্ম নেই। দেশে ফিরে যেতে পারবে কিনা জানেনা, তাদের ভবিষ্যত কী? এসব প্রশ্ন তাদেরকে হতাশ করছে। এই হতাশাগ্রস্ত জনগণকে স্বার্থান্বেষী মহল খারাপ কাজে ব্যবহার করতে পারে। হতাশার সুযোগ নিতে পারে।’
মিয়ানমারকে জোরালো চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত জোরালো চাপ দেওয়া, যাতে মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়।’ রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। রোহিঙ্গারা স্থানীয় জনগণের চেয়ে সংখ্যায় অনেক বেশি হয়ে গেছে।’ বর্ষা মৌসুমে রোহিঙ্গাদের কষ্টকর জীবনযাপন এবং তাদের কষ্ট লাঘবে সাময়িকভাবে ভাষান চরে আবাসনের ব্যবস্থা করতে সরকারের কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা উল্লেখ করে ব্রিটিশ মন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের সর্বশেষ অবস্থান জানতে চান। প্রধানমন্ত্রী তা সবিস্তারে তুলে ধরেন। পুনর্নির্বাচিত হওয়া এবং টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান বৃটিশ মন্ত্রী। তিনি আওয়ামী লীগের বিজয়কে ‘বিগ ভিকটরি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। দুই দেশের সম্পর্কটা দ্রুত আরও শক্তিশালী হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন বৃটিশ মন্ত্রী।
এ সময় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের সম্পর্ক চমৎকার।’ মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্য ও তার জনগণের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ক্লাইমেট চেঞ্জ ইস্যুতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশকে সমর্থন করায় যুক্তরাজ্যের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় নিজস্ব অর্থায়নে ফান্ড গঠন ও উপকূলে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
ব্রিটিশ উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন।’ গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রাম করে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারাজীবন গণতন্ত্র উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছি।’ বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীন উল্লেখ করে শেখম হাসিনা বলেন, ‘তারা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করছে।’
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাজ্য।’ সাক্ষাতের সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।