চীনের বাজারে বাংলাদেশের নতুন সুযোগ
চীন সম্প্রতি তার বাজারে ৯৫% বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার ঘোষণা করেছে। জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র এক বৈঠকের সময় চীনা মন্ত্রী এ কথা জানান। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি চীনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে এবং বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণও অনেক। বর্তমানে চীনে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশী পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া, মাছ ও কাঁকড়া, প্লাষ্টিক বর্জ্য, ফুল, সব্জি ও ফল, মসলা এবং তামাক ইত্যাদি। এর মধ্যে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রক্রিয়াজাত চামড়ার ৬০%-এরও বেশি রপ্তানি হয় চীনে। এছাড়া অপ্রক্রিয়াজাত চামড়ারও একটি বড় অংশ রপ্তানি হয় চীনে। আর সেক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলে চামড়াজাত অন্যান্য পণ্য যেমন জুতা, ব্যাগ এবং আনুষাঙ্গিক পণ্যে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে বর্তমানে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক উৎপাদকরা সারা পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে ২১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে থাকেন। আর এর মধ্যে মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয় চীনে। বিশ্বে তৈরী পোশাকের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ চীন, আর দেশটি প্রতিবছর ৩৩৮ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, চীনের মোট চাহিদার একটি অংশ যদি বাংলাদেশ পূরণ করতে পারে, সেটি বাংলাদেশের রপ্তানি আয়কে বহুগুন বাড়িয়ে দেবে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, চীনের বাজারে ৯৫% বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার ঘোষণাটিকে কাজে লাগানোর জন্য এখুনি সরকারের উদ্যোগ নেয়া উচিত। আর সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমানও অনেকটাই কমে যাবে বলে তারা মনে করছেন। চীনের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রায় চার হাজার আটশ’টি পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে। আর সেই সাথে দেশটিতে বাংলাদেশী পণ্যের রপ্তানির পরিমানও প্রতি বছর বেড়ে চলেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসেব অনুযায়ী, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ চীনে প্রায় ১০৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল, যা ২০১২-১৩ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫৯ মিলিয়ন ডলারে। সূত্র : বিবিসি