মানিকপীর (রহ.) এর মাজার কবরস্থানে দাফন
মাওলানা আমকুনির জানাযায় মানুষের ঢল
সিলেটের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম, ইসলামী আন্দোলনের অগ্র সৈনিক, বাতিল বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথ কাপাঁনো দিক-পাল, হাজার হাজার ছাত্র-আলেম-ওলামার উস্তাদ, নগরীর জামেয়া মাহমুদিয়া সোবহানিঘাট মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম মাওলানা শফিকুল ইসলাম আমকুনির জানাজা সম্পন্ন হয়েছে ঐতিহাসিক আলীয়া মাদ্রাসা ময়দানে। আজ রবিবার বিকাল ৩টায় নগরীর চৌহাট্টাস্থ আলিয়া মাদরাসা মাঠে সূর্যের প্রখর উত্তাপ অপেক্ষা করে দুর-দুরান্ত থেকে অগুনিত মানুষ উপস্থিত ঘটে জানাযায় দিনের এই রাহবারকে শেষ বিদায় দিতে।
জানাযা পূর্বে পূর্বে মরহুমের জীবনী নিয়ে রাজনীতিবিদ, আলেম-উলামারা বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা বলেন, ‘মাওলানা আমকুনি ছিলেন একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমে দ্বীন ও বহুগুণে গুণান্বিত শ্রদ্ধাভাজন মানুষ। দ্বীনি শিক্ষার প্রচার-প্রসার ও বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তার অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার মৃত্যুতে ইসলামী রাজনৈতিক অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।’ বক্তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
জানাযার জানাজার নামাজে ইমামতি করেন মরহুমের বড় ছেলে মাওলানা আহমদ কবির। পরে মানিকপীর (রহ.) এর মাজার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। আমকুনির জানাজায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদস, কানাইঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান মুমিন চৌধুরী। জানাযার নামাযে শীর্ষ আলেম উলামার মধ্যে বক্তব্য ্ও উপস্থিত ছিলেন দরগাহ হযরত শাহজালাল মাদ্রাসার মুহতামীম মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী, আযাদ দ্বীনে এদারা বোর্ড এর সভাপতি মাওলানা জিয়া উদ্দিন, ম্ওালানা আব্দুল আলী দূলর্ভপুরী, ভার্তখলা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ম্ওালানা মজদুদ্দীন, বন্দর বাজার জামে মসজিদ এর খতীব ম্ওালানা মোস্তাক আহমদ খান, কাজির বাজার মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ম্ওালানা শাহ মম্শাদ আহমদ, আযাদ দ্বীনে এদারা বোর্ড এর মহাসচিব ম্ওালানা আব্দুল বাছিত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার বাদ মাগরিব নগরীর মিরাবাজার আগপাড়াস্থ বাসায় ইন্তেকাল করেন মাওলানা শফিকুল ইসলাম আমকুনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে, ৫ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মাওলানা আমকুনী নিজ গ্রাম সুন্দিশাইল মসজিদ থেকে শিক্ষাজীবনের সূচনা করেন। এরপর জামিয়া হুসাইনিয়া রানাপিং, জামিয়া দেউলগ্রাম, জামিয়া ঢাকা দক্ষিণ মাদ্রাসায় প্রাথমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেন। পরবর্তীতে তিনি মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা ও পাকিস্তানের জামিয়া বিন্নুরী নিউ টাউন থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। বরেণ্য এ আলেম সিলেট নগরীর সোবাহানীঘাট জামিয়া মাহমুদিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম, সোবহানীঘাট মসজিদের মুতাওয়াল্লি ও খতিব হিসেবে আজীবন দায়িত্ব পালন করে গেছেন। এছাড়া তিনি সিলেটের জামিয়া হুসাইনিয়া গহরপুর, জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুর, জামিয়া দারুসসালাম খাসদবীর মাদ্রাসা-সহ অসংখ্য দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক, মুহতামিম, মুহাদ্দিস হিসেবে ধর্মীয় অঙ্গনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।