হামলার পেছনে বিদেশি গোষ্ঠি জড়িত: শ্রীলংকা

শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়ালো

শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। মোট আটটি স্থানে ভয়াবহ এ বোমা হামলায় নিহত ৩১০ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন চার শতাধিক। নিখোঁজও রয়েছেন বেশ কিছু মানুষ। রবিবার দুই দফা বোমা হামলার পর সোমবার সকালে শ্রীলঙ্কার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে প্রাণহারানোর সংখ্যা ২৯০ জন জানায় সংবাদমাধ্যম। তবে একদিনের ব্যবধানে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে সে সংখ্যা ২০ জন বৃদ্ধি পেয়ে ৩১০ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ানও রয়েছে। এছাড়া প্রাণ হারিয়েছে আট ভারতীয়ও।

খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপন করা হচ্ছিলো গির্জাগুলোতে। এর মধ্যেই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি গির্জায় বোমা হামলা হয়। আধঘণ্টার মধ্যেই হামলা হয় কলম্বোর ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সেন্ট সেবাস্টিন গির্জা ও ২৫০ কিলোমিটার দূরে বাট্টিকালোয়ার জিওন গির্জায়। প্রার্থনালয়গুলো যখন কাঁপছিল, সমানে হামলা হতে থাকে কলম্বোর অভিজাত কিংসবারি, সাংগ্রিলা এবং সিনামোন গ্র্যান্ড হোটেলে। এই হোটেলগুলোতে তখন বিপুলসংখ্যক বিদেশি নাগরিক ছিলেন।

হামলার পেছনে বিদেশি গোষ্ঠি জড়িত: শ্রীলংকা
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা হামলার দায় কেউ স্বীকার না করলেও সোমবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের মুখপাত্র রজিথা সেনারত্নে বলেন ‘রবিবারের এমন ভয়াবহ হামলা দেশের কোনো গোষ্ঠী চালিয়েছে বলে আমাদের বিশ্বাস হয় না। তাদের সঙ্গে অবশ্যই আন্তর্জাতিক যোগসূত্র রয়েছে। তা না হলে এভাবে তারা সফল হতে পারতো না। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ছাড়া এমন হামলা হতে পারে না।’

সিনারত্নের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স বলছে, হামলায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক জড়িত। স্থানীয় কোনো দল এভাবে হামলা চালাতে পারে না। রয়টার্স জানায়, সিনারত্নে বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না দেশের ভেতরের কোনো গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে। হামলায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক জড়িত। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ছাড়া এ ধরনের হামলা সফল হতো না।’

তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “গোয়েন্দা প্রতিবেদন ইঙ্গিত করছে যে এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের পেছনে বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রয়েছে।”

মন্ত্রী রাজিথা সেনারত্নেও বলেন, “আমরা মনে করি না যে এই হামলাগুলোতে শুধু আমাদের দেশের একটি গোষ্ঠীই জড়িত। আন্তর্জাতিক একটি চক্র রয়েছে, যাদের সহায়তা ছাড়া তারা (স্থানীয় সন্ত্রাসী) সফল হত না।”

বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল টাইগাররা এক দশক আগে উৎখাত হওয়ার পর এমন ভয়াবহ হামলা আর দেখা যায়নি শ্রীলঙ্কায়। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মধ্যরাত থেকে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে ভারত লাগোয়া দ্বীপরাষ্ট্রটিতে। হামলার পর অভিযানে সন্দেহভাজন অন্তত ২৪ জনকে আটকের খবর দিয়েছে শ্রীলঙ্কা পুলিশ; তবে তাদের কারও পরিচয় জানা যায়নি।
শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যার মাত্র ৯ শতাংশ মুসলিম, খ্রিস্টান ৭ শতাংশ। দেশটির ৭০ শতাংশই বৌদ্ধ, হিন্দু আছে ১২ শতাংশ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button