ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হলেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি রাবিনা খান

মে মা‌সে অনু‌ষ্ঠেয় ইউ‌রো‌পীয় ইউ‌নিয়‌নের (ইইউ) নির্বাচ‌নে লড়ছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি কাউন্সিলর রাবিনা খান। মূলধারার রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাট (লিবডেম) পা‌র্টি‌র ব্রেক্সিটবিরোধী অবস্থান থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। রাবিনা বলেছেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদের বিপক্ষে অবস্থান তার দলের। ‘রিমেইন’-এর (ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়া) পক্ষে প্রচারণা করছেন তিনি।

যুক্তরাজ্যে ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচ‌নের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ২৩ মে। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এই নির্বাচনে অংশ নিতে অনাগ্রহী ছিলেন। তবে ব্রেক্সিটের নির্ধারিত তারিখ ৬ মাস পিছিয়ে ৩১ অক্টোবর হওয়ায় নির্বাচনে যুক্তরাজ্যের অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচনে লন্ড‌নের আসন থে‌কে লড়‌ছেন তিন সন্তা‌নের জননী রা‌বিনা। ৪৬ বছর বয়সী এই নারীর গ্রা‌মের বাড়ী সি‌লে‌টের গোলাপগঞ্জ উপ‌জেলায়। বর্তমা‌নে টাওয়ার হ্যাম‌লেটস কাউ‌ন্সিলের শাডও‌য়েল ওয়ার্ড ‌থে‌কে নির্বা‌চিত কাউ‌ন্সিলর তিনি।

রা‌বিনা বৃহস্প‌তিবার বলেন, আমার দল লিব‌ডেম রি‌মেই‌নের (ইইউতে যুক্তরাজ্যের থেকে যাওয়া) প‌ক্ষে ক্যা‌ম্পেইন কর‌ছে। আমা‌দের অর্থনী‌তি‌কে শ‌ক্তিশালী রাখার লক্ষ্য নিয়ে আমি স্থানীয় ও জাতীয়ভা‌বে ক্যা‌ম্পেইন কর‌ছি।’ আসন্ন নির্বাচ‌নে জয়ী হতে সবার সহ‌যোগিতা কামনা ক‌রেন তিনি।

ক্যা‌রিয়া‌রের শুরু‌তে ২০১০ সা‌লে রাবিনা লেবার পা‌র্টির হ‌য়ে প্রথমবার কাউ‌ন্সিলর নির্বা‌চিত হয়েছিলেন। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে তিনি তৎকালীন বাঙালি মেয়র লুতফুর রহমানের দল টাওয়ার হ্যামলেটস ফার্স্ট পার্টিতে যোগ দেন। গত বছ‌রের ২৯ আগস্ট তার নি‌জের গড়া দল ‘পিপলস অ্যালায়েন্স অব টাওয়ার হ্যামলেটসকে’ বিলুপ্ত ক‌রে সমর্থক‌দের নি‌য়ে যোগ দেন ব্রি‌টে‌নের রাজনী‌তির মূলধারার দল লিবডেম পা‌র্টি‌তে।

ইউরোপিয়ান ডাইভার্সিটি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী রাবিনা ১৯৯২ সালে ১৯ বছর বয়সে টাওয়ার হ্যাম‌লেট‌সের বা‌সিন্দা আমিনুর খান‌কে বি‌য়ে ক‌রে সেখানে বসবাস শুরু ক‌রেন। তার বই আয়েশাদস রেইনবো সূধিজনের প্রশংসা লাভ করেছে। টাওয়ার হ্যাম‌লেট‌স কাউ‌ন্সি‌লের গত নির্বাচনে মেয়র প‌দে প্র‌তিদ্বন্দ্বিতা ক‌রে দ্বিতীয় অবস্থা‌নে ছি‌লেন রা‌বিনা খান। এবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি।

২০১৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত গণভোটে ব্রিটিশ নাগরিকেরা ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় দিলে এর প্রক্রিয়া নিয়ে ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্য ও ইইউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে ,২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার তারিখ নির্ধারিত হয়। চুক্তিটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদন করানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও কয়েক দফায় অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে তা প্রত্যাখ্যাত হয়। এ পরিস্থিতিতে ব্রেক্সিট কার্যকর করতে গত ১০ এপ্রিল দেশটিকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনের তারিখ বিলম্বিত ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্যকে এতে অংশ নিতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button