১২ লাখ মুসল্লির কাবা শরিফে জুমার নামাজ আদায়

Kabaজুমার নামাজ আদায়ের জন্য শুক্রবার প্রায় ১২ লাখ মুসল্লি ও হজযাত্রীর সমাগম ঘটে পবিত্র কাবা শরিফকে কেন্দ্র করে। কাবা শরিফের ভেতর ও বাইরের খোলা চত্বর এবং মেসফালা, সামিয়া, গাজা, জিহাদমহল ও হযরত মোহাম্মদের (সাঃ) জন্মস্থান চত্বরসহ পার্শ্ববর্তী দেড় কিলোমিটার সড়ক মুসল্লিতে ভরে যায়। ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে তারা নামাজ আদায় করেন। সুউচ্চ ভবনের ছায়ায় ও শপিং মলের বারান্দাতেও দাঁড়িয়ে অনেকে নামাজ আদায় করেন। মানুষের এ ব্যাপক আগমন ও নামাজ আদায় পর্বকে সুশৃংখল রাখতে স্থানীয় পুলিশ সকাল ৮টায় মসজিদের চারদিকের সবগুলো সড়ক বন্ধ করে দেয়। দেশ থেকে হজ করতে আসা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে শুক্রবার অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশী ভিড় জমান কাবা শরিফের আশপাশে। এদের মধ্যে অনেকে দুই হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে আসেন। কেউ আসেন ১১০ কিলোমিটার দূরের জেদ্দা থেকেও। বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই তারা মক্কা চলে আসেন। জুমার নামাজ শেষে তারা আত্মীয়দের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এ জন্য কাবা চত্বরের বাইরে অপেক্ষমাণ মানুষের প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়। অনেকে খাবার দিয়ে আÍীয়দের আপ্যায়ন করেন। একজন হাজীকে চার-পাঁচ প্রবাসী খাওয়াতে আসেন। একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেন। কেউ আবার সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দেন। অনেকে ওমরাহ পালন করেন। হজ মৌসুমে এ এক বিরল দৃশ্য।
হজযাত্রীদের থাকার সুবিধার্থে পবিত্র মদীনায় হজ উপশহর নির্মাণে হাত দিয়েছে সৌদি সরকার। এখানে থাকবে ২০ লাখ অ্যাপার্টমেন্ট, ৪০০ শয্যার অত্যাধুনিক হাসপাতাল, ফোর স্টার ও ফাইভ স্টার মানের আবাসিক হোটেল, সরকারি অফিস ইত্যাদি। উপশহর নির্মাণে প্রায় পাঁচ লাখ নির্মাণ শ্রমিক নিয়োগ করা হবে। বাংলাদেশ সরকার এ সুযোগটি গ্রহণ করতে পারলে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট প্রভাব ফেলবে। শ্রমবাজার ধরে রাখতে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার শ্রমমন্ত্রীরা প্রতিমাসে দু-তিনবার সৌদি আরব সফর করছেন। এই তিনটি দেশ থেকে শ্রম বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো। কেননা বাংলাদেশী শ্রমিকদের মজুরি কম। তাদের মধ্যে রয়েছে একনিষ্ঠতা ও সততা।
সৌদি আরবে বন্ধ হওয়া বাংলাদেশের শ্রমবাজার খুব শিগগিরই খুলে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে মানবিক কারণে সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ এ ব্যাপারে আদেশ জারি করেছেন। এই আদেশবলে প্রাথমিক অবস্থায় গৃহকর্মী ও গাড়িচালক আনা হবে। এ জন্য সৌদি সরকার শর্ত জুড়ে দিয়েছে যে, বাংলাদেশ থেকে কোনো অপরাধী যেন শ্রমিক বেশে সৌদি আরবে ঢুকতে না পারে। আর এ ধরণের ঘটনা ঘটলে দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারকে বহন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১০-১১ সালে কয়েকজন বাংলাদেশী শ্রমিক সৌদি আরব, মিশর ও ইয়েমেনের ১৮ জনকে হত্যা করায় সৌদি সরকার বাংলাদেশের শ্রমিক আমদানি বন্ধ করে দেয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button