ওয়ার্থিংয়ে প্রথম মুসলিম বাংলাদেশী নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত
এনাম চৌধুরী: ব্রিটেনের ওয়ার্থিংয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রথম একজন মুসলিম বাংলাদেশী নারী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশী নারী হেনা চৌধুরী। হেনা চৌধুরীর পুরো নাম ফেরদৌসী হেনা চৌধুরী। সমাজ কর্মী হেনা চৌধুরী লেবার পার্টির সদস্য হিসেবে কাজ করলেও সামাজিক ভিবিন্ন কার্যক্রমে তার ব্যাপক পরিচিত ছিল।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের নোয়ারাই গ্রামের মরহুম হাজী নুরুল ইসলাম ও মিসেস আঙ্গুরা বেগমের এক ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় ফেরদৌসী হেনা চৌধুরী। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস)-এ সোশ্যাল ওয়ার্কার (স্কুল এন্ড মেন্টাল হেলথ) কাজ করেন পাশাপাশি তিনি এনএইচএস এ কমিউনিটি ইন্টারপিটার হিসেবে কাজ করছেন। দশ বছর বয়সে বাবা-মা’র সাথে ব্রিটেনে আসা হেনার পড়াশুনা এবং বেড়েওঠা ওয়ার্থিংয়েইI
গত ২ মে অনুষ্ঠিত ওয়ার্থিং বারা কাউন্সিল নির্বাচনে বিরোধী লেবার দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হেনা চৌধুরী ১২১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন । অনলাইন ওয়ার্থিং হেরাল্ড সংবাদে জানা যায়, তিনিই প্রথম মুসলিম এবং বাঙালি প্রার্থী যিনি কনজারভেটিভ পার্টির শক্তিশালী ঘাঁটি থেকে নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। ওই নির্বাচনের ফল যখন ঘোষণা হচ্ছিল অ্যাসেম্বলি হল থেকে তখন হেনার নেতাকর্মী, সমর্থকরা তার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিলেন। ফল ঘোষণার পর অভিভূত হেনা এ সময় আবেগে কেঁদে ফেলেন।
তিনি বলেন, আমি অভিভূত। কখনো ভাবি নি প্রথম একজন এশিয়ান, বাংলাদেশী নারী হিসেবে এবং একজন মুসলিম গাসফোর্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হবে। আমি সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছি। কখনো ভাবিনি এমনটা ঘটবে। আমাকে বলা হয়েছিল, প্রতিদ্বন্দ্বী খুব শক্তিশালী। অনেকে আমার নেতিবাচক দিক নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু আমি বলতে চাই, দেখুন কত ইতিবাচক মানুষ আছেন। তারা আমাকে ভালবাসা দিয়েছেন। শ্রদ্ধা দিয়েছেন। তারাই রায় দিয়েছেন কে আমি। এ জন্য স্থানীয় এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। নির্বাচনে পরাজিত হলেও আমার কোনো কষ্ট ছিল না। তিনি বলেন মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দেখিয়েছে সেটার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
মানুষ আমাকে যে সময় দিয়েছেন, সকালে কাজে যাওয়ার আগে ভোট দিতে এসেছেন, দুপুরে মধ্যাহ্নভোজের সময় ভোট দিতে এসেছেন, সন্ধ্যায় ভোট দিতে এসেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমি শেষ করতে পারবো না হেনা চৌধুরী আরো বলেন মানুষের এ ভালোবাসার মূল্য আমি যেন আমার কাজের মাধ্যমে দিতে পারি। ভোটের দিন কেন্দ্র থেকে একবারও সরে যাননি হেনা চৌধুরী। তিনি টানা ১৫ ঘন্টা সেখানে অবস্থান করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি ১৫ ঘন্টা অবস্থান করেছি। কোথাও যাই নি। সবাই চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু আমি সেখানে ছিলাম ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত। কারণ, আমি চেয়েছি ভোট দিতে এসে কোনো ভোটার যাতে এমনটা না দেখেন যে, কেন্দ্রে কোনো প্রার্থী নেই। তাদের জন্য কেউ অপেক্ষা করছে না। তারা যা বিশ্বাস করেছেন, আমার ওপর আস্থা রেখেছেন সেজন্য আমি নির্বাচিত। তাদের আশা পূরণ করার চেষ্টা করবো।
সিলেট সদর উপজেলার টুকের বাজার ইউনিয়নের শাহ খুররম খলা গ্রামের মরহুম আহমেদ হোসাইন চৌধুরী’র পুত্রবধূ ফেরদৌসী হেনা চৌধুরী’র স্বামী সমাজসেবী মিল্লাদ হোসাইন চৌধুরী ওয়ার্থিংয়ের একজন সুপরিচিত ব্যবসায়ী। তিন সন্তানের জননী মিসেস হেনার বড় মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়, মেজো মেয়ে কলেজে এবং কনিষ্ঠ মেয়ে সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশুনা করছে।