যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করল ইউরোপ
ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো ‘সামরিক ব্যবস্থা’ নেয়ার ব্যাপারে আমেরিকাকে সতর্ক করে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ। মার্কিন সরকার যখন নিজে ইরানের ওপর চাপ শক্তিশালী করার পাশাপাশি ইউরোপকে এ কাজে সহযোগী হিসেবে পাওয়ার চেষ্টা করছে তখন এ হুঁশিয়ারি দিল ইইউ। স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে ইইউ’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ফেডেরিকা মোগেরিনি। তিনি বলেন, সামরিক দিক দিয়ে যেকোনো পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সোমবার তার নির্ধারিত মস্কো সফর বিলম্বিত করে ব্রাসেলসে ছুটে যান। কিন্তু সেখানে ইরানের পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী তিন দেশ জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পম্পেও’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি; এমনকি তারা তার সঙ্গে ছবি তুলতেও রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত মোগেরিনি একাই পম্পেওর সঙ্গে বৈঠক করেন ও ফটোসেশনে অংশ নেন।
বৈঠকের পর মোগেরিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “পম্পেওকে আমরা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, আমরা একটি স্পর্শকাতর নাজুক সময় অতিক্রম করছি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সব সময় সংলাপ ও কূটনৈতিক উপায়ে সব সমস্যার সমাধানে বিশ্বাসী। ইরানের ক্ষেত্রেও একই কাজ করতে হবে।”
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, পাশ্চাত্যের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার কিছু ধারা স্থগিত রাখার পূর্ণ অধিকার ইরানের রয়েছে। তিনি সোমবার রাশিয়ার বন্দরনগরী সোচি’তে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন। ল্যাভরভ বলেন, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার ভেতরেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, যদি এতে স্বাক্ষরকারী বাকি পক্ষগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ইরান তার দেয়া কিছু প্রতিশ্রুতি স্থগিত রাখতে পারবে। তিনি আরো বলেন, চীন ও রাশিয়া মনে করছে, যেকোনো মূল্যে পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখতে হবে এবং ইরানের ওপর আমেরিকার পক্ষ থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।
গত ৮ মে ইরান পরমাণু সমঝোতার কিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করে। এর আওতায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এবং ভারী পানি মজুদ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি ইরান আর মানবে না। আমেরিকা এ সমঝোতা একতরফাভাবে পরিত্যাগ করার এক বছর পর সমঝোতার কিছু ধারা বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত থাকবে বলে ঘোষণা করল ইরান। আমেরিকার পক্ষ থেকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর ইশতেহার লঙ্ঘনের প্রথম বার্ষিকীতে প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেন, ইরান আগামী দুই মাস সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ও ভারী পানি বিক্রি বন্ধ রাখবে।