ইসলামবিদ্বেষের সংজ্ঞা নির্ধারণে ব্রিটেনে বিশেষজ্ঞ প্যানেল

ইসলামবিদ্বেষের সংজ্ঞা নির্ধারণে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল তৈরির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। বৃহস্পতিবার সরকারের এ সংক্রান্ত ঘোষণায় বলা হয়, এ সংজ্ঞা নির্ধারণে দুইজন বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা নিয়োগ করা হবে। তারা এ সংক্রান্ত নতুন একটি সমীক্ষার নেতৃত্ব দেবেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে এ বিষয়ে কথা বলেন দেশটির কমিউনিটি বিষয়ক মন্ত্রী জেমস ব্রোকেনশায়ার। নিজের বক্তব্যে তিনি ইসলামবিদ্বেষের একটি আনুষ্ঠানিক সংজ্ঞা নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার প্রতি তার সমর্থনের কথা জানান।

জেমস ব্রোকেনশায়ার বলেন, ব্রিটিশ মুসলিম বা অন্যদের বিরুদ্ধে তাদের বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের কারণে যে বিদ্বেষ রয়েছে তাতে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এটি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং এটি আমাদের দেশের মূল্যবোধের ঘটায় না। ইসলামোফোবিয়ার আনুষ্ঠানিক সংজ্ঞা কি হবে তা নিয়ে যুক্তরাজ্যের মুসলিম সংগঠন ও পুলিশ প্রধানদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। দেশটিতে মুসলিমবিদ্বেষী অপরাধ সামাল দিতে এই সংজ্ঞা ও চিহ্নিতকরণ জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ প্রস্তাব দেয়, ইসলামোফোবিয়া আসলে বর্ণবাদ। এটি এক ধরনের বর্ণবাদ যা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্য তৈরি করে। তবে যুক্তরাজ্যের পুলিশ প্রধানদের জাতীয় পরিষদ এক বিবৃতিতে সতর্ক করে জানায় যে, এই সংজ্ঞার বিস্তৃতি অনেক বড়। ফলে এতে দ্বিধা তৈরি হতে পারে।

মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার মার্টিন হেউইট বলেন, আমরা সব ধরনের বিদ্বেষমূলক অপরাধ গুরুত্ব সহকারে নেই এবং পূর্ণ তদন্ত করি। ব্রিটিশ মুসলিমদের অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ যে সংজ্ঞা দিয়েছে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমাদের মনে হয় এই সংজ্ঞাটির বিস্তৃতি অনেক বেশি। এতে করে আইন বাস্তবায়নে দ্বিধা তৈরি হতে পারে। এই সংজ্ঞায় বাকস্বাধীনতা চ্যালেঞ্জেরর মুখে পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। মুসলিম বিদ্বেষ নিয়ে সংজ্ঞা আরও স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন।

ব্রিটেনের মুসলিম পরিষদ (এমসিবি) রাজনৈতিক নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন এপিপিজি-র সংজ্ঞা মেনে নেবেন। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন খান বলেন, ‘পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাছে থাকা তথ্য ও প্রমাণ দিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তিনি বলেন, বিষয়টি এমন হলে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের বাস্তবতা সত্যিই উদ্বেগজনক। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ইসলামোফোবিয়ার আনুষ্ঠনিক সংজ্ঞা প্রদানের আহ্বান জানায় এপিপিজি। টেরিজা মে সরকারও আনুষ্ঠানিক সংজ্ঞা অনুমোদনের চাপে ছিল। ইতোমধ্যেই এই সংজ্ঞা নির্ধারণের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন লেবার পার্টি ও লিবারের ডেমোক্রেটের মতো বিরোধী দলগুলো।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button