ইংল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারল টাইগাররা
বাংলাদেশকে ১০৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের দেয়া ৩৮৭ রানের পহাড়সম লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮০ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ (১২১) রান করেন সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাট করে জেসন রয়ের (১৫৩) ও জস বাটলারের (৬৪) রানের ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৮৬ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। কার্ডিফ সোফিয়া গার্ডেনে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে টসে জিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় ম্যাচটি শুরু হয়।
টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশী বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা শুরু করেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও জনি বায়েস্ট্রো। ওপেনিং জুটিতে দুজনে ১৯.১ ওভারে তোলেন ১২৮ রান। ৫০ বলে ৬ চারে ব্যক্তিগত ৫১ রান করে বিধ্বংসী বায়েস্ট্রো আউট হন মাশরাফির বলে মেহেদি মিরাজের তালুবন্দি হয়ে। আরেক ওপেনার জেসন রয়ের ব্যাট ছিল অবিচল। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রয়-জো রুটকে নিয়ে গড়েন ৮৭ রানের জুটি। যার মধ্যে শুধূ ২১ রান রুটের। রয়ের একাই তান্ডব চালায় টাইগার বোলারদের ওপর। জো রুটকে (২১) রানে ফিরিয়ে ৮৭ রানের জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৩৫তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম তিন বলে ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে বোলারদের ওপর আরো বেপরোয়া হওয়ার ইঙ্গিত দেন রয়। কিন্তু; তিন ছক্কা খেয়ে মিরাজ রয়কে দেথতে চাননি আর মাঠে। ওভারের ৪র্থ বলে দারুণ এক ডেলিভারিতে মাশরাফির ক্যাচ বানিয়ে রয়কে ফেরান মিরাজ। ১২১ বলে ১৪ চার ও ৫ ছয়ে ১৫৩ রান করেন রয়। চতুর্থ উইকেট জুটিতে জস বাটলার ও মরগান হয়ে ওঠেন টাইগার বোলারদের জন্য তনুত আতঙ্কা। এই উইকেটে দুজনে মিলে গড়েন ৯৫ রানের জুটি। ৪৪ বলে দুই চার ও ৪ ছয়ে ৬৪ রান করেন বাটলার। সৌম্য সরকারের দারুণ এক ক্যাচে সাইউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন বাটলার। ৩৩ বলে ৩৫ রান করেন মরগান। শেষ দিকে ক্রিস ওয়াকসের ১৮ ও লিয়াস প্লাঙ্কেটের ৩০ রানের সুবাধে ৬ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ৩৮৫ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড।
বাংলাদেশী বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মেহেদি হাসান মিরাজ দুটি করে উইকেট শিকার করেন। মাশরাফি-মোস্তাফিজ নেন একটি করে উইকেট।
ইংল্যান্ডের দেয়া ২৮৭ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য পাড়ি দিতে নেমে শুরুতেই সৌম্যর উইকেট হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে দলীয় দলীয় ৮ ও ব্যক্তিগত ২ রান করে জোফরা আর্চারের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওপেনার সৌম্য সরকার। সৌম্য সরকারের পর ১৯ রান করে মার্ক উডের বলে মরগানের তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার তামিমে ইকবালও। দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ওয়ানডাউনে নামা সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম।এই জুটিতে বাংলাদেশ তোলে ১০৬ রান।৫০ বলে ৪৪ রান করেন মুশফিক। মুশফিকের উইকেট তুলে নিয়ে জুটি ভাঙেন লিয়াম প্লাঙ্কেট।ব্যাট করতে নেমে শূন্য রানে আদিল রশিদের শিকার হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ মিথুন। অন্যদিকে ইংলশিদের একাই জবাব দিতে থাকেন সাকিব।দলীয় ২১৯ রানের মাথায় সাকিবের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে এর আগে বিশ্বকাপে নিজেরে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব।বেন স্টোকসের বলে আউট হওয়ার আগে ১১৯ বলে ১২ চার ও এক ছয়ে ১২১ রান করেন এই অলরাউন্ডার।মাহমুদুল্লাহর ২৮, মোসাদ্দেকের ২৬ ও মেহেদি মিরাজের ১২ রানের সুবাধে ৪৮.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮০ রান সংগ্রহ করতে পারে বাংলাদেশ। এই নিয়ে বাংলাদেশ হারল টানা দুটি ম্যাচ। আর ইংল্যান্ড পেল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় জয়।
ইংল্যান্ড বোলারদের মধ্যে বেন স্টোকস ও জোফরা আর্চার ৩টি, মার্ক উড ২টি, লিয়াম প্লাঙ্কেট ও আদিল রশিদ একটি করে উইকেট শিকার করেন। ১২১ বলে ১৫৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন ইংল্যান্ডের ওপেনার ব্যাটসম্যান জেসন রয়।