ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন
বাংলাদেশের পর্যটন খাত সমৃদ্ধ করছেন দেশি পর্যটকরা
বিদেশি পর্যটকের দিকে তাকিয়ে থাকা নয়, দেশি পর্যটকের ওপর ভর করেই দিন দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে বাংলাদেশের পর্যটন খাত। বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। পত্রিকাটি বলছে, দিন দিন বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় দেশীয় পর্যটকের হার বাড়ছে। এদের কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে আবাসন, যোগাযোগ ও বিপণন ব্যবস্থা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে ৩ লাখ বাংলাদেশি ছুটি কাটাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ৭০ লাখে! মাত্র ১৭ বছরেই প্রায় ২৩ গুণ দেশি পর্যটক বেড়েছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল আরও বেশি। দেশীয় পর্যটকদের কেন্দ্র করে এ খাতের বিকাশের কথা স্বীকার করছে ট্যুরিজম বোর্ডও। সরকারি সংস্থাটির প্রধান ভুবন বিশ্বাস বলেন, এতে পর্যটন খাতের দ্রুত প্রসার ঘটছে।
প্রতিবেদনে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একটি উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। চায়ের জন্য বিখ্যাত এলাকাটির বনাঞ্চলের পাশে ৫ বছর আগে ‘শান্তিবাড়ি’ নামে একটি ইকো রিসোর্ট গড়ে তোলেন তানভীর আরেফিন লিঙ্কন। মূলত বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে তিনি এটি নির্মাণ করেন।
স্থানীয়রা তখন উপহাস করে বলত, টেলিভিশন, এয়ারকন্ডিশন ছাড়া এ হোটেলে কে টাকা দিয়ে থাকবে? লিঙ্কন বলতেন, বিলাসবহুল কক্ষ নয়, বিলাসবহুল পরিবেশের জন্য আসবেন পর্যটকরা। তার একথা ফলেছে। মাত্র ৫ বছরের মাথায় তিনি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। তবে বিদেশিদের চেয়ে দেশি পর্যটকদের আনাগোনাই এখানে বেশি।
ইকোনমিস্ট বলছে, বাংলাদেশিরা ক্রমেই ভ্রমণপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনেকেই এখন দেশের নানা প্রান্তে ভ্রমণ করছেন। দেশের বাইরে ভ্রমণে যাওয়ার হারও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। মূলত বাংলাদেশিদের মানসিকতার এ পরিবর্তনই দেশের পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করছে। পত্রিকাটি বলছে, পর্যটন খাতের বিকাশে দেশিরাই যে যথেষ্ট- এর উত্তম দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ।