মিথ্যাচার করছে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিথ্যাচার করছে মিয়ানমার। তারা বলছে, বাংলাদেশের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দেরি হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এক পায়ে খাড়া। রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে বার বার আশ্বাস দিলেও কথা রাখছে না মিয়ানমার। ছয় মাস আগে তারা ব্রিফিং করে বলেছিল সব ঠিকঠাক করে দেবে। কিন্তু গত মাসের বৈঠকে দেখা গেলো, নতুন কোনও অগ্রগতি হয়নি। এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গা, এমনকি নো-ম্যানস ল্যান্ডে যারা আছেন তারাও ফেরত যায়নি। তাদের এমন ডাহা মিথ্যা কথা কতক্ষণ সহ্য করা যায়?

বুধবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রোহিঙ্গা সংকটের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে কূটনীতিকদের সহায়তা চেয়ে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ, যাতে তারা (মিয়ানমার) রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করে।

ব্রিফিংয়ের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তারা (বিদেশি কূটনীতিক) আমাদেরকে বলেছেন যে, তারা আমাদের সাথে আছেন। আমরা তাদেরকে বলেছি, মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ বৃদ্ধি করুন, যাতে তারা সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং প্রায় সবাই এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ।’

ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিথ্যাচার করছে মিয়ানমার। জাপানের ফিউচার এশিয়া সম্মেলনে মিয়ানমারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের কারণেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দেরি হচ্ছে। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এক পায়ে খাড়া।

তিনি বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেটা তারা রাখছে না। রাখাইনে ৮০০টি গ্রামের মধ্যে তারা মাত্র দুইটি গ্রামের পরিস্থিতি ভালো দেখিয়ে বলছে, সেখানে কোনো সমস্যা নেই।

সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইদানীং (রোহিঙ্গাদের মধ্যে) কিছুটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু হচ্ছে। এটা আমরা অনেক দিন ধরেই আঁচ করেছিলাম যে এই বিরাট সংখ্যক লোক যদি পড়ে থাকে, তাহলে তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়ার আশঙ্কা আছে। এ জন্য মিয়ানমারকে আবার জোর দিয়ে বলব, তোমরা তোমাদের কথা রাখো। লোকগুলোকে নিয়ে যাও। আর তাদের (মিয়ানমারের) বন্ধুপ্রতিম দেশ যারা, তাদেরও আমরা সম্প্রতি বলেছি এবং বলব। তাদের আমরা জোর করে বলব, তোমরাই আমাদের উপদেশ দিয়েছ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করে ফেরত দেওয়ার। আগে আমরা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করে ফেরত দিয়েছি। তোমাদের বন্ধুকে বলো, ওদেরকে নিয়ে যেতে। কারণ, যদি না নিয়ে যায় (রোহিঙ্গাদের মধ্যে) সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়তে পারে, তখন তোমরা যে ওখানে বিনিয়োগ করেছ বা করবে বলে আশা করেছ, সবকিছু ভেস্তে যাবে। যদি অনিশ্চয়তা থাকে, তাহলে সেখানে উন্নয়ন সহজে হয় না।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button