শাকিব-লিটনের ব্যাটে দুরন্ত জয় বাংলাদেশের
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আর লিটন দাসের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে টনটনের ছোট মাঠে বড় দলের মতো করেই জিতলো বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের ৩২১ রানের সংগ্রহটা ছিলো অনুমেয়। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে ভালো করতে হলে, এসব ম্যাচে জিততে হবে দাপট দেখিয়ে। সে কাজটি যেন অক্ষরে-অক্ষরে মিলিয়েই করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি ও লিটন কুমার দাসের ফিফটির সঙ্গে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের যোগ্য দুইটি ইনিংসে সহজ জয়ই পেয়েছে টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ৩২১ রানের সংগ্রহটা মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ৫১ বল হাতে রেখেই টপকে ফেলেছে বাংলাদেশ।
সোমবার টনটনের কুপার অ্যাসোসিয়েটস কাউন্টি গ্রাউন্ডে টস জিতে প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ৩২১ রান তোলেন ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু এই বিশাল রানের টার্গেট সহজেই পার করে যায় বাংলাদেশ।শাকিবের অসাধারণ আত্মবিশ্বাসে ভর করে বাংলাদেশ পেরিয়ে গেল বিশাল রানের লক্ষ্য। সাত উইকেটে জিতে আবার বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ। ১২৪ রানে শাকিব ও ৯৪ রানে লিটন দাস অপরাজিত থাকলেন।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ধাক্কা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার বিগ হিটার ক্রিস গেইলকে রানের খাতা খুলতে না দিয়েই প্যাভেলিয়নে ফিরিয়ে দেন সইফুদ্দিন। কিন্তু শুরুতেই উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে খুব সমস্যায় ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। এর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের হাল ধরে নেন এভিন লুইস (৭০) ও শাই হোপ (৯৬)। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন হোপ।
এই দু’জন প্যাভেলিয়নে ফিরে যেতেও ভেঙে পড়েনি ক্যারিবিয়ান ইনিংস। ১৫৯-৩ থেকে নিকোলাস পুরান ও শিমরন হেটমেয়ার ইনিংসকে নিয়ে যান ২৪২-৪-এ। নিকোলাস পুরান ২৫ ও হেটমেয়ার ৫০ রান করে আউট হন। আন্দ্রে রাসেল ক্রিস গেইলেরই পথ ধরেন। এর পর জেসন হোল্ডারের ৩৩ ও ড্যারেন ব্রাভোর ১৯ রান বড় রানে পৌঁছে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
বাংলাদেশের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন মহম্মদ সইফুদ্দিন ও মুস্তাফিজুর রহমান। দুই উইকেট নেন শাকিব আল হাসান। বলের পর ব্যাট হাতেও বাজিমাত করেন তিনি।
বিশাল রানের পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে একবারও টলে যায়নি বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাস। ওপেনার সৌম্য সরকার ২৩ বলে ২৯ রান করে আউট হয়ে যাওয়ার পর তামিম ইকবাল ও শাকিব আল হাসান মিলে বাংলাদেশের রানকে ১২১-এ নিয়ে যান। তামিম ইকবাল অল্পের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন। ৫৩ বলে ৪৮ রান করে আউট হন তিনি। সেটাও প্রভাব ফেলেনি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। কারন তখনও ক্রিজে রয়েছেন শাকিব। তিনি যতক্ষণ ২২ গজে ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ততক্ষণ যত কঠিন লক্ষ্যই থাক না কেন ভরসা রাখা যায়। সেটা আরও একবার প্রমাণ হল।
কিন্তু তাঁর সঙ্গে বলতে হবে লিটন দাসের অনবদ্য সঙ্গতের কথা। মাঝে মুশফিকুর রহিম মাত্র ১ রান করে আউট হয়ে যান। বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচ শেষ করেন শাকিব আল হাসান (১২৪) ও লিটন দাস (৯৪)। দু’জনেই অপরাজিত থাকেন। আন্দ্রে রাসেল ও ওশানে থমাস একটি করে উইকেট নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, ড্যারেন ব্র্যাভো, শাই হোপ, নিকোলাস পুরান, শিমরন হেটমেয়ার, জেসন হোল্ডার (অধিনায়ক), আন্দ্রে রাসেল, শেল্ডন কটরেল, ওশানে থমাস, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।
বাংলাদেশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, শাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মহম্মদ সইফুদ্দিন, মেহেদি হাসান, মাশরাফে মোর্তাজা (অধিনায়ক), মুস্তাফিজুর রহমান।