ব্রিটিশ ভিসা পেতে সীমাহীন ভোগান্তি
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের ভিসা পেতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একজন প্রার্থী আবেদন করার পর ভিসা পাবেন কিনা তার যেমন নিশ্চয়তা নেই। তেমনি কবে তিনি ভিসার বিষয়ে জানতে পারবেন তারও কোনো ঠিক নেই। ভিসা পাওয়া না পাওয়ার ফলাফল জানতে গিয়ে ধরনা দিতে হচ্ছে গুলশানের সায়মন সেন্টারে। এতে করে ভিসাপ্রার্থীদের হয়রানি দিন দিন বাড়ছেই।
এর আগে ঢাকা থেকে ভিসা সেন্টার দিল্লিতে স্থানান্তরের সময় ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আশ্বস্ত করেছিল- ভিসা সেন্টার দিল্লিতে স্থানান্তর হলেও ঢাকা থেকে ভিসা পেতে কোনো সমস্যাই হবে না। বরং আরও যত্নের সঙ্গে ভিসা আবেদনগুলো দেখা হবে। তবে ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ভিসাপ্রার্থীদের হয়রানির ও ভোগান্তি বাড়ছেই। ভিসা চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন কিংবা সময়মতো ভিসা পাননি এ তালিকায় যুক্ত হয়েছেন দেশের একাধিক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, ব্যবসায়ী এবং খ্যাতিমান সাংবাদিকরাও।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ভিসা প্রত্যাখ্যানের চেয়েও বেড়েছে সময়মতো ভিসা না দেওয়ার ঘটনা। ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার পর সায়মন সেন্টার থেকে যে তারিখ দেয়া হচ্ছে- ওই তারিখে গিয়েও কোনো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। সায়মন সেন্টার থেকে সম্ভাব্য আরেক তারিখ দেয়া হচ্ছে। আবার সেই তারিখে গিয়েও কোনো ফলাফল না পাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এভাবে একের পর এক দিন-তারিখ নির্ধারণে ভিসাপ্রার্থীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আর এতে করে লন্ডনসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগদান, চিকিৎসা সেবা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা সবকিছুই ব্যাহত হচ্ছে।
হাইকমিশন সূত্র জানায়, ঢাকায় ভিসাকেন্দ্র থাকার সময়ে মোট আবেদনের ৬৯ শতাংশ আবেদনই গ্রহণ করা হতো। ভিসাকেন্দ্র দিল্লিতে যাওয়ার পর ভিসা পাওয়ার সংখ্যা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ভিসার আবেদনের পর সাধারণ ক্ষেত্রে ১৫ দিনের মধ্যে এবং বিশেষ ক্ষেত্রে (প্রিমিয়াম ভিসা) ৭ দিনের মধ্যে ভিসা ইস্যুর জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি হলেও দিল্লিতে ভিসাকেন্দ্র স্থাপনের পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভিসাসহ পাসপোর্ট ফেরত দিতে এক মাস কিংবা তারও বেশি সময় নেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, এখান থেকে ভিসা প্রসেসিংয়ের প্রাথমিক কার্যক্রম সেরে দিল্লিতে পাঠানো হয়। তারা সঠিক সময়ে প্রসেসিং না করায় সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা আছে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।
এদিকে দিল্লিতে ভিসাকেন্দ্র স্থানান্তরের পর জটিলতা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রবাসীদের মধ্যেও ক্ষোভ বাড়ছে। এ ব্যাপারে ব্যাপকভিত্তিক কর্মসূচি পালনের জন্য লন্ডনপ্রবাসী এবং দেশে থাকা তাদের স্বজনরা মিলে একটি সমন্বয় কমিটিও গঠন করেছেন।