গুগল ব্রেইন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ইতিহাসে নতুন চমক

ইবরাহীম খলিল: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় একের পর এক চমক যেন লেগেই আছে। ঘরে ব্যবহারের সাধারণ যন্ত্র থেকে শুরু করে কারখানায় চালিত যন্ত্রতেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার হচ্ছে। গত ৫০ বছরে প্রযুক্তির যা উন্নতি হয়েছে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এরচেয়ে বেশি উন্নতি হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার যেমন মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলছে তেমনই এর কারণে অনেকেই বিপদের মুখে পড়ছে। তবে আজ আপনাদের এমন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কথা জানাবো, যার সঠিক প্রয়োগ ও ব্যবহারের মাধ্যমে মানব জাতির শুধুমাত্র কল্যাণই সাধিত হবে না বরং তা এই মহাবিশ্বের মানুষের মস্তিষ্ককে আরও দ্রুতগামী করবে। তার সাথে সাথে অযথা সময় নষ্ট করে তথ্য খোঁজাখুজির বিরক্তি থেকে মুক্তি দেবে।

আপনারা নিশ্চয়ই এতোক্ষণে বুঝে গেছেন আমি এমন এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কথা বলবো যা সরাসরি মানুষের মস্তিষ্কের সাথে জড়িত। তাহলে আপনি সঠিক পথেই এগুচ্ছেন। তাহলে আর দেরি না করে আপনাদের জানাই, ইংল্যান্ডের The Daily Star–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে Fountech.ai এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও নিকোলাস কাইরিনোস জানান, আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমাদের মাথার ভিতর এমন একটি যন্ত্র স্থাপন করে দেওয়া যাবে যাতে আমাদের আর মুখস্ত করার প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। এতে আমাদের শিক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন হয়ে যাবে। শুধু তাই না আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন কর্মকান্ডেরও পরিবর্তন আসবে। এটি স্থাপনের ফলে আপনাকে আর কোন কিছু জানার জন্যে গুগলে সার্চ করতে হবে না এমনকি কোন শব্দও করতে হবে না।
আপনার মাথায় প্রশ্ন আসবে আর সাথে সাথে যন্ত্রটি গুগল থেকে সেই তথ্য আপনার মস্তিষ্কে এনে দিবে অর্থাৎ আপনি এই তা জেনে যাবেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে যারা জানেন না তাদের কাছে এই তথ্যগুলো অবিশ্বাস্য লাগবে ঠিকই। কিন্তু যারা আগ্রহ রাখেন ও জানেন, তারা এতোক্ষণে বুঝতে পেরেছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্থাপনের ধারণা এবারই প্রথম না।
এর আগে টেলসা কোম্পানীর সিইও এল্যোন মাস্ক NEURALINK-এর ধারণা দেন। যা কম্পিউটার থেকে মানুষের মস্তিষ্কে তথ্য স্থানান্তর করবে প্রয়োজন মত, লাগামহীনভাবে। নিকোলাস জানান “তোতাপাখির মত মুখস্ত করার যে প্রচলন আমাদের আছে তা সম্পূর্ণরূপে মুছে যাবে। কারণ এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্থাপনের মাধ্যমে আমরা যেকোন সময় যেকোন তথ্য পেয়ে যেতে পারি।” তিনি আরও জানান, “গুগল আপনার মাথায় থাকবে এবং এর বাস্তবায়ন খুব দূরবর্তী নয়। এটা একটা বুদ্ধিমান সহকারী হিসেবে কাজ করবে যা আসলে প্রায় আপনার মতই চিন্তা করবে।” এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরির কাজের অগ্রগতির সম্বন্ধে পাঠকদের সঠিক ধারণা না দিলেও তিনি বলেন, “আমরা এমন একটা দিকে যেখানে বিপুল পরিবর্তন দেখা যাবে। এখন আমাদের যা আছে আগামী ৫ বছরের মধ্যে তা সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যাবে।”
নিকোলাস বিশ্বাস করেন, “এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা সংগঠিত সকল পরিবর্তন মানব কল্যাণের জন্যে ব্যবহার হবে। এই মেশিন সারা পৃথিবীতে মানুষের জন্যে কল্যাণ বয়ে আনবে বলে আমি আশা রাখি”। অনেকেই ধারণা করছেন, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা মানুষের মস্তিষ্ককে আরও জোরালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যেমন, যে কোন পানীয় কোম্পানী যদি এটিকে স্পন্সার করে তাহলে ব্যক্তির শরীর যখন পানি চাইবে তখন তার ব্রেনে পানি নয় বরং ঐ পানীয়র জন্যে চাহিদা তৈরি হবে। তবে যাই হোক, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাটি মানব কল্যাণে কতটুকু ব্যবহার করা যাবে তা তো সময়ই বলে দিবে। আপাতত আমারা যারা প্রযুক্তি প্রেমে আছি তাদের তো অপেক্ষা কখন এটি বাজারে আসবে আর কখন এটি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button