ব্রিটিশ সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জোর দেওয়ার তাগিদ
রোহিঙ্গা সংকট এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাজ্যে শেষ হয়েছে দুই দিনের এক সম্মেলন। শুক্রবার শেষ হওয়া ওই সম্মেলনে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত সন্ত্রাস ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকটের জন্য লিঙ্গ, ধর্ম ও মূল্যবোধের ভূমিকাসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। এই সম্মেলনে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া মুনা তাসনিম বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রক্ষায় বাংলাদেশ সামর্থ্যের সবকিছু করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত এই জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ লাঘবে পশ্চিমা বিশ্বকে ত্রাণ সরবরাহের মাধ্যমে ঢাকার পাশে দাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে বাস করা রোহিঙ্গার সংখ্যা দশ লাখেরও বেশি।
বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে দুই দিনের সম্মেলন আয়োজন করে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজের ইন্সটিটিউট ফর রিস্ক অ্যান্ড ডিজাস্টার রিডাকশন। শিক্ষাবিদ, অ্যাকটিভিস্ট, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ নানা পেশার মানুষেরা এই সম্মেলনে যোগ দেন।
সম্মেলনে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত এবং কম প্রতিনিধিত্বশীল জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিশ্ববাসী ভুলে যেতে পারে না। শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের কাভারেজ না পাওয়ার অর্থ এই নয় যে তাদের সঙ্গে যা ঘটেছে তা আসলে ঘটেনি। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল অভূতপূর্ব আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন তাদের বসবাসের ব্যবস্থা করতে ঢাকা তার সামর্থ্যের সবকিছু করেছে। তিনি পশ্চিমা বিশ্বকে ত্রাণ সরবরাহ ও সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া মুনা তাসনিম বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িতদের সহায়তার নৈতিক দায় রয়েছে পশ্চিমা বিশ্বের। প্রায়ই তারা নৈতিকতা ও মূল্যবোধের কথা বলে কিন্তু এসেছে তাদের সেইসব কথাকে কাজে পরিণত করার মতো সময় এসেছে আর যেসব মানুষ তাদের ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়েছে, স্বজন হারিয়েছে, আর ফিরতে পারছে না তাদের জীবনে সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন আনতে কাজ করতে হব।