পানিবন্দি ৭০ লাখের বেশি মানুষ
দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যায় নিহত দেড় শতাধিক
চলতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণের কারণে বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপাল, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। মৌসুমী বৃষ্টিতে দেশগুলোর বেশির ভাগ নিম্নাঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যার কারণে তিন দেশে মারা গেছেন শতাধিক মানুষ। এছাড়া পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ।
হিমালয় থেকে নেমে আসা ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও কয়েকদিন ধরে বৃদ্ধির কারণে আসাম ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্রের পানি ঢুকে পড়ায় অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ভারতের দারিদ্রপীড়িত প্রদেশ আসাম এবং বিহার। উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় আসামে পানি বাড়তে থাকায় গত ১০ দিনে কয়েক লাখ মানুষ বাড়ি-ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
আসামে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে রাজ্য প্রশাসন। টানা বৃষ্টিতে বিহার, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা রাজ্যেও দেখা দিয়েছে বন্যা ও ভূমিধস। স্থানীয় সরকারের এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজ্যের ৩৩ জেলার মধ্যে ৩০টিই বন্যা কবলিত। যেখানে পানিবন্দি রয়েছেন প্রায় ৪৩ লাখ মানুষ। নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়াল বলেছেন, ‘আসামের ৩১ থেকে ৩২টি জেলায় বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি। আমরা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছি।’ বিহারেও বন্যায় প্রাণহানীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। রাজ্যের ১২ জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ২৬ লাখ মানুষ। এছাড়া মিজোরাম এবং ত্রিপুরায় বন্যা ও ভূমিধসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাজ্য দু’টির সাথে গোটা ভারতের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, গেল বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমালয়ের দেশ নেপাল। প্রতিবেশি দেশ নেপালের ২৫টি জেলায় দেখা দিয়েছে বন্যা। সেদেশে বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ৭৮ জন নিহতের ভকর পাওয়া গেছে ও নিখোঁজ রয়েছে অনেকে। নিহতের অনেকেই ভূমিধসের কারণে ঘর-বাড়ির নিচে চাপা পড়েছিলেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, দেশটির এক তৃতীয়াংশ জেলা ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। আর সাম্প্রতিক বন্যা ও ভূমিধসে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নিহত হয়েছে ২৪ জন। এঘটনায় নিঁখোজ রয়েছে ২২ জন।
এদিকে, বাংলাদেশের বেশ কিছু জেলায় বন্যার পানিতে প্রায় ২ লাখ মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বলে সরকারি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।