লন্ডনে ইউকে জমিয়তের শতবার্ষিকী আন্তর্জাতিক মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত (ভিডিও)

সৈয়দ নাঈদ আহমদ: দেশে দেশে মুসলিম নির্যাতনের ভয়াল বিনাশ যজ্ঞের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ ও সুপরিকল্পিত আন্দোলন সংগ্রাম বিশ্বব্যাপি জোরদার করার আহবান জানিয়ে লন্ডনে শেষ হলো জমিয়তে উলামার শত বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মহা সম্মেলন। গত ১৫ জুলাই সোমবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পূর্ব লন্ডনের রয়েল রিজেন্সী হলে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকে আয়োজন করে শতবার্ষিকী এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউকে জমিয়তের সভাপতি মাওলানা শুয়াইব আহমদ। সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন ইউকে জমিয়তের জেনারেল সেক্রেটারী মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ ও সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ।
সম্মেলনে ঘোষণা পত্র ও লিখিত দাবিনামা উপস্থাপন করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সিনিয়র সহ সভাপতি মুফতি আব্দুল মুনতাকিম। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য টেলিফোনযোগে রাখেন বিশ্ব মুসলিমের অন্যতম নেতা, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সায়্যিদ আরশাদ মাদানী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী ও সাউথ আফ্রিকা জমিয়তের জেনারেল সেক্রেটারী মুফতি ইবরাহীম বাম। সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ এর জেনারেল সেক্রেটারী মাওলানা সায়্যিদ মাহমুদ মাদানী, বাংলাদেশ জমিয়তের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা নূর হুসাইন কাসিমী, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব টেলিফোনিক বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও সম্মেলনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আল খায়ের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইমাম কাসিম, ইউকে জমিয়তের প্রধান উপদেষ্টা শায়খ মাওলানা আসগর হুসেন, উপদেষ্টা মাওলানা তহুর উদ্দিন, ইউরোপ জমিয়তের উপদেষ্টা মাওলানা মুস্তফা আহমদ ও ডক্টর মুফতি আব্দুর রহমান মাঙ্গেরা, মাওলানা শায়খ তরিকুল্লাহ, জমিয়তে উলামা ব্রিটেনের মুফতি খালিদ, ইস্টহাম বিলাল মসজিদের ইমাম ও খতীম মাওলানা নিয়াজ, শায়খুল হাদীস মুফতি আব্দুর রহমান মনোহরপুরী, শায়খ সুলেমান গণি, বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার ড. শায়খ রামজী, শায়খ মাওলানা ইউনূস দুধওয়ালা, খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ, নিউহ্যাম কাউন্সিলের ডেপুটি স্পিকার ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এর কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফয়েজ আহমদ, টাওয়ার হ্যামলেটস এর সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমদ, খেলাফত মজলিস যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি মাওলানা ছাদিকুর রহমান, শত বার্ষিকী সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান হাফিজ হোসাইন আহমদ বিশ্বনাথী, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারী মোহাম্মদ জুবায়ের, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা সাইফুর রহমান, বিশিষ্ট আলেম মাওলানা নাজমুদ্দিন কাসেমী, ফরেস্ট গেইট মসজিদের খতিব মাওলানা হেলাল উদ্দিন, মাইলেন্ড মসজিদের খতিব মাওলানা নাজির উদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস যুক্তরাজ্য শাখার সেক্রেটারী মুফতি সালেহ আহমদ, ইউকে জমিয়তের জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা আশফাকুর রহমান, মাওলানা শামছুল আলম কিয়ামপুরী, লন্ডন মহানগর খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা এনামুল হক, ইউকে জমিয়তের যুববিষয়ক সম্পাদক মুফতি সৈয়দ রিয়াজ আহমদ, প্রচার সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক হাফিজ মাওলানা সৈয়দ হুসাইন আহমদ, সহ প্রচার সম্পাদক হাফিজ রশীদ আহমদ প্রমুখ। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন তাফসিরুল কোরআন সম্পাদক হাফিজ মাওলানা মুশতাক আহমদ, নাশিদ পরিবেশন করেন হাফিজ মাওলানা ছাইদুর রহমান। শতবার্ষিকী সম্মেলন উপলক্ষ্যে ইউকে জমিয়তের পক্ষ থেকে সমৃদ্ধ একটি স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
প্রধান অতিথির টেলিফোনিক বক্তব্যে বিশ্ব মুসলিমের অন্যতম নেতা, জমিয়তে উলামায়েহিন্দ এর প্রেসিডেন্ট আল্লামা সায়্যিদ আরশাদ মাদানী বলেন আমি ইউকে জমিয়তের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বশরীরে যোগদানের ওয়াদা করেছিলাম। কিন্তু শারিরিক কারণে না আসতে পারায় নিজেকে দুঃখিত ও লজ্জিত বোধ করছি। মাওলানা আরশাদ মাদানী জমিয়তের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর ইতিহাস তুলে ধরে বলেন জমিয়তে উলামা পরপর কয়েকটি স্বাধীনতা যুদ্ধে কোরবানী ও সংগ্রামের অতুলনীয় নজীর স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিকে সামনে রেখে মুসলিম সংখ্যালঘু দেশ সমূহে জমিয়তে উলামাকে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সেবা ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে তার অবদান অব্যাহত রাখার প্রয়োজন। মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে শান্তি ও ভালোবাসা প্রতিষ্ঠা এবং জুলুমের প্রতিকার কল্পে জমিয়ত তার অসমান্য খেদমতের মাধ্যমে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে আজ দেশে দেশে সুনামের অধিকারী হচ্ছে। আজ ইসলামের বিরুদ্ধে সবচে’ বড় ষড়যন্ত্র এটাই করা হচ্ছে যে ইসলামে নাকি পরমত সহিষ্ণুতা নেই, ইসলাম নাকি অন্য ধর্মকে সহ্য করতে পারে না। বর্তমানে এসব মিথ্যা অপবাদের জবাব আমাদেরকে জমিয়তের প্লাট ফর্ম থেকে মানবতার কল্যানে কাজ করার মধ্য দিয়ে দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী বলেন, জমিয়তের শতবার্ষিকী আন্তর্জাতিক সম্মেলন লন্ডনের মত জায়গায় আয়োজন করায় আমি ইউকে জমিয়তের তরুণদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই। যে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে জমিয়তের আকাবির, সবচে’ বেশি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন, সে ব্রিটিশদের দেশে বসে আকাবিরে জমিয়তের কীর্তিগাঁথা নিয়ে আলোচনা করতে পারা বিরাট বড় ব্যাপার। মুহাদ্দিস হবিগঞ্জী জমিয়তের বৈশিষ্ট, কৃতিত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে তাঁর প্রামাণ্য আলোচনায় বলেন যে একাধারে তিনটি দিক ইলমে হাদীস, ইলমে মা’রিফত এবং সিয়াসত ও রাজনীতি’র যোগসূত্র এবং সনদ ও সিলসিলা যদি দেখা যায়, তাহলে তিনটি বিষয়েই জমিয়তের সনদ হযরত শাহ আব্দুল আযীয দেহলভী (রাহ:) হয়ে জনাব রাসুলুল্লাহ (সা:) পর্যন্ত অনায়াসে পৌঁছে যায়, এমন কৃতিত্ব জমিয়ত ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যাবে না।
বিশেষ অতিথির টেলিফোনিক বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জেনারেল সেক্রেটারী মাওলানা সায়্যিদ মাহমুদ মাদানী বলেন অদ্যকার শতবার্ষিকী সম্মেলনে অংশ গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে টিকেট পর্যন্ত করে নিয়ে ছিলাম। কিন্তু কিছু আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে উপস্থিত না হতে পেরে নিেিজকে বঞ্চিত মনে করছি।

মাওলানা মাহমুদ মাদানী বলেন জমিয়তে উলামা এমন একটি সংগঠন, যার সফলতার জন্য আমাদের আকাবির ও পূর্বসূরীগণ কত যে চোখের পানি ভাসিয়েছেন, তার কোন হিসাব নেই। আমি ইউকে, জমিয়তের উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাউথ আফ্রিকা জমিয়তের জেনারেল সেক্রেটারী, ন্যালসন মেন্ডেলার শেষ কৃত্য অনুষ্ঠানের একমাত্র মুসলিমবক্তা মুফতি ইবরাহীম বাম বলেন যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যথাযথ ও সময়োপযোগী ভূমিকা পালন এবং মুসলিম উম্মাহর প্রতিটি সমস্যা ও ইস্যুর সমাধানের জন্য জমিয়তে উলামা অস্তিত্ব লাভ করেছে। জমিয়তের ঐতিহাসিক অবদান না থাকলে জানিনা আজ উম্মতের অবস্থা কত যে ভয়াবহ হতো। মুফতি ইবরাহীম জমিয়তের প্রাক্তন সভাপতি শায়খুল ইসলাম মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী সম্পর্কে মাওলানা সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নাদভীর উক্তি উল্লেখ করে বলেন যে ইলিম, আমল এবং আন্দোলন সংগ্রাম ইত্যাদি সবকিছুর অপূর্ব সমন্বয় হযরত মাদনীর জীবনে ঘটেছিলো। মুফতি ইবরাহীম সাউথ আফ্রিকায় জমিয়তে উলামার সম্মানজনক ও সবার শীর্ষে অবস্থান সম্পর্কে বলেন যে সেখানে জমিয়তে উলামার ফায়সালা সর্ব বিষয়ে সবাই গ্রহণ করে থাকেন। বর্তমানে নতুন প্রজন্ম ও যুব সম্প্রদায়কে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিশেষত: পশ্চিমা বিশ্বে সবচে’ বেশি কাজ করা উচিত। দুঃখ জনক হলেও সত্য যে আজ যুব সমাজের উপর আমাদের কোন প্রভাব নেই। এর জন্য আধুনিক মিডিয়া ও ইন্টারনেটের ময়দানে আমাদের যোগ্যতাপূর্ণ পদচারণা সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। মুফতি ইবরাহীম বলেন এসব উদ্দেশ্য সাধনে আমাদেরকে জমিয়তের ছায়াতলে সমবেত হয়ে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সংগ্রামী মহাসচিব মাওলানা নূর হুসাইন কাসিমী তার টেলিফোনিক বক্তব্যে বলেন আমাদের স্বাধীনতার জন্য জমিয়তের অবদান অভূলনীয়।হক ও হাক্কানিয়াতের সূতিকাগার হলো দারুল উলুম দেওবন্দ। আর দেওবন্দের আকাবিদের সংগঠন হলো জমিয়ত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউকে জমিয়তের প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ আসগর হুসাইন বলেন আমাদের রাজনীতি কোরআন সুন্নাহর অনুশাসন ব্যক্তি জীবন থেকে নিয়ে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ছাড়া অন্যকিছু নয়। এ মহান উদ্দেশ্য সাধনে অন্তর পরিস্কার করে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের মধ্যে অনৈক্য এবং ঝগড়া বিবাদ কোনভাবেই যেন শেষ হতে চায় না। অনৈক্য শেষ করে মহব্বতের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য নফসানিয়াতের কোরবানী দিতে হবে। শায়খ আসগর হুসাইন শতবার্ষিকী সম্মেলনের জন্য তরুণ উলামায়ে কেরামের সফল চেষ্টার ভূয়সি প্রসংশা করে তাঁদের জন্য মন ভরে দোয়া করেন।
আন্তর্জাতিক জমিয়ত সম্মেলন লন্ডন এর পক্ষ থেকে মুফতি আব্দুল মুনতাকিম সম্মিলিতভাবে গৃহীত দাবিনামা উপস্থাপন করেন।
সম্মেলন থেকে দাবি জানানো হয় যে বিশ্ব শক্তিগুলো মুসলমান দেশ সমূহকে পারস্পরিক যুদ্ধের মধ্যে ঠেলে দিয়ে ভয়ংকর অস্ত্র বাণিজ্যের খেলায় মেতে উঠেছে। এ ভয়াবহ অবস্থার মোকাবেলা করতে হবে। সিরিয়া, ফিলিস্তিন, ইরাক ও কাশ্মীর সহ আজ দেশে দেশে মুসলমানদের রক্ত ঝরছে, বোমা মেরে মুসলমানদের ঘর বাড়ি চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়া হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মুসলমান শরনার্থীদের করুণ আর্তনাদে আজ আকাশ বাতাস ভারি হয়ে আছে। দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জোরদার আন্দোলন নতুন উদ্দীপনায় আরম্ভ করতে হবে।
সম্মেলনের পক্ষ থেকে বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর ইতিহাসের নিকৃষ্ঠতম বর্বরতা’র তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে বলা হয় যে, এ মগের মুল্লুকের বিনাশযজ্ঞে আধুনিক বর্বরতা ও শিউরে উঠেছে। মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানদের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব এবং মানবাধিকার সহ বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন সময়ের সবচে’ বড় দাবি।
সম্মেলন থেকে ভারতের মুসলমানদের উপর অবিরত বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানানো হয় এবং বিশ্ব মুসলিমকে স্বোচ্ছার ভূমিকা পালন করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয় সম্মেলনে ইয়েমেনের মুসলমানদের উপর যুদ্ধের অভিশাপ চাপিয়ে দেয়া এবং অর্থনৈতিক অবরোধের মাধ্যমে দুর্ভিক্ষগ্রস্থ এ ভূখন্ডের নাগরিকদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়ারও তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
সম্মেলনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ধর্মীয় পরিচয় বিনষ্টের সকল অপচেষ্টার নিন্দা জানানো হয়। পাঠসূচী “বিবর্তনবাদ” এর ন্যায় নাস্তিক্যবাদী বিশ্বাস কে স্থান দেয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয় যে, কোরআন সুন্নাহ এবং আলেম উলামার অনুকরণে আমাদের পলিসি নির্ধারনের বিষয়টি সরকারকে গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। অন্যথায় তাওহিদী জনতার রোষানলে পতিত হলে পরিণতি যে ভালো হয় না, তার প্রমাণ অতীত ইতিহাস।
সম্মেলনে কাদিয়ানীদের আস্ফালনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয় যে এদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা করা নেহায়েত জরুরী। সম্মেলনে বাংলাদেশের সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম এর সঠিক অনুবাদ যোগ এবং মহান আল্লাহ পাকের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি স্পষ্টভাবে উল্লেখেরও দাবি জানানো হয়।
সম্মেলনে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা ও অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে বলা হয় যে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও চরম পন্থার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। যারা নিজেদের অপরিণামদর্শী কাজের দ্বারা ইসলামকে বদনাম করতে চায়, তাদের সাথে ইসলাম, মুসলমান, আলেম উলামা, মসজিদ-মাদ্রাসা এবং কোরআন হাদীসের কোন সম্পর্ক নেই। পরিশেষে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে শতবার্ষিকী মহাসম্মেলন সমাপ্তি হয়।
সম্মেলনে এছাড়াও বিশিষ্ট জন অংশগ্রহণ করেন যথাক্রমে কাউন্সিলর এনাম হুছেন, মাওলানা মওদুদ হাসান, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী, ইউকে জমিয়তের উপদেষ্টা আলহাজ্ব শামসুজ্জামান চৌধুরী, মাওলানা আবদাল হোসেন চৌধুরী, আলহাজ্ব সুফি উদ্দিন আহমদ, মাষ্টার সৈয়দ ফররুখ আহমদ, আলহাজ্ব খালিস মিয়া, ইউকে জমিয়তের সহ সভাপতি মাওলানা সৈয়দ তাছাদ্দুক আহমদ, দেশ পত্রিকার সম্পাদক তাইছির মাহমুদ, লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ রিজেন্টস পার্কের খতিব শায়খ কাজী লুৎফুর রহমান, বিশিস্ট সাংবাদিক কবি আবদুল কাইয়ুম, কমিউনিটি নেতা আবদুল মুনিম জাহিদী ক্যারল, আলহাজ্ব নূর বক্স, পীর আহমদ কুতুব, ইউকে জমিয়তের সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুল মজিদ, মাওলানা বশির উদ্দিন, মাওলানা হারিছ উদ্দিন, মাওলানা সাঈদ আলী, বাংলাদেশ জমিয়তের কেন্দ্রীয় সদস্য ইমদাদুর রহমান, মাওলানা আব্দুল করিম মামরখানী, হাফিজ কাজি আব্দুর রহমান, আলহাজ্ব সৈয়দ জিয়াউল হক, হাজী ইউনুস আলী, মাওলানা আবুল হাসানাত চৌধুরী, সাংবাদিক কয়েছ আলী, বুলবুল আহমদ, ইউকে জমিয়তের সহকারী ট্রেজারার মুফতি মোতাহির ছিদ্দিক, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ জিয়া উদ্দিন, মাওলানা মঈন উদ্দিন খান, মিডিয়া সেক্রেটারী হাফিজ মাওলানা খালিদ, কেন্দ্রীয় সদস্য হাফিজ ছাদিকুল ইসলাম, আশিক আলী প্রমুখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button