আই ডোন্ট কেয়ার দিজ আল্টিমেটাম : অর্থমন্ত্রী
রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতাকারীদের কোনো পরোয়া করেন না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘আই ডোন্ট কেয়ার দিজ আল্টিমেটাম।’ তিনি বলেছেন, “এটাকে ইউজলেস বলেই মনে করি আমরা। এটা কান্ট্রির ইন্টারেস্টের সাথে রিলেভেন্ট না।”
রোববার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে তিনি এ কথা বলেন।
সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিমার্ণের বিরোধীতার কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আনু মুহাম্মদ সাহেব যাই বলুক না কেন, আমাদের কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতেই হবে। কারণ কয়লা সবচেয়ে সস্তা। আমরা এটা ব্যবহারের চেষ্টা করছি।’
মুহিত বলেন,“কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে বলে যে আশঙ্কার কথা আন্দোলনকারীরা বলছেন, তার পক্ষে কোন তথ্য প্রমাণ নেই।”
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যা এমন আশঙ্কার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মুহিত বলেন,“এর কোন ফ্যাক্টস নেই। এই কেন্দ্র হলে পরিবেশের ওপর কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে বিশ্লেষণ (ইআইএ) ওয়েবসাইটে দেয়া আছে। দক্ষ লোক দিয়েই তা তৈরি করা হয়েছে।”
সুন্দরবন থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূরত্ব যথেষ্ট কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “যে দূরত্বে বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে তা কোয়াইট সাফিশিয়েন্ট।”
২২ অক্টোবর রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপন হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এটা বন্ধ করার জন্য ১১ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে মুহিত বলেন, ‘আই ডোন্ট কেয়ার দিজ আল্টিমেটাম। এটাকে ইউজলেস বলেই মনে করি আমরা। এটা কান্ট্রির ইন্টারেস্টের সঙ্গে রিলেভেন্ট না।’
তবে অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেন, ‘কয়লাভিত্তিক কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি দূষণমুক্ত হয় না। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও উন্নমানের কয়লা ব্যবহার করে দূষণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যায়।’
মুহিত আরো বলেন, ‘আমি পরিবেশবাদী হিসেবে বলতে পারি, দূষণ কমানোর জন্য আমরা নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ঠিক করে দেব। নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি সালফারযুক্ত কয়লা ব্যবহার করা হবে না।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়লাভিত্কি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে পরিবেশবাদী ও বামপন্থী কয়েকদিল দল এবং সংগঠন।
এ কেন্দ্রটি স্থাপন হলে সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়বে জানিয়ে প্রতিবাদে লংমার্চও করেছে তারা। লংমার্চ থেকে ১১ই অক্টোবরের মধ্যে সরকারকে তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আল্টিমেটামও দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। আর আজকের খুলনার জনসভা থেকে এর সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি সহ ১৮-দলীয় জোট।