বাড়ি নির্মাণ হবে ৮০ শতাংশ কম দামে : নির্মান হবে ২০ মিনিটে !

Houseবাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে পরিবেশবান্ধব, হাল্কা, দ্রুত স্থাপনযোগ্য এক্সপ্যান্ডেড পলিস্টিরিন স্যান্ডউইচ (ইপিএস) প্যানেল। ফলে প্রচলিত ইটের পরিবর্তে ইপিএস দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা যাবে প্রায় ৮০ শতাংশ কম দামে। অ্যাডভান্সড ডেভেলপমেন্ট টেকনোলজিস লিমিটেড বিদেশি প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এই প্যানেল দেশেই উৎপাদন করবে। জানা যায়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাপক জনপ্রিয় তাপ নিরোধক এই ইপিএস শিট দিয়ে মাত্র ২০ মিনিটেই একটি বাড়ি নির্মাণ করা যাবে। এ ছাড়া এটি খুব সহজেই স্থানান্তরও করা যায়। উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন এ ধরনের প্যানেল বিভিন্ন ধরনের শিল্পস্থাপনা, অবকাঠামো, ওয়ার্ক স্টেশন এনক্লোজার এবং শেড, ওষুধ কম্পানি, পোশাক এবং চা শিল্পের জন্য ওয়্যার হাউস কোল্ড স্টোরেজ, সাশ্রয়ী আবাসন, স্কুল, কলেজ, প্রদর্শনী হল, গ্রিন হাউস, ভাসমান আবাসন, শব্দ নিরোধী মিলনায়তন, থিয়েটার হাউস, উপকূলীয় অঞ্চলে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণকাজে তাপ সহনীয় এবং শব্দহীন দেয়ালের জন্য পরিবেশগতভাবে আদর্শ ও উপযোগী।
অ্যাডভান্সড ডেভেলপমেন্ট টেকনোলজিস ২০০৭ সালে ঢাকার অদূরে গজারিয়ায় কারখানা স্থাপন করেছে ৫৫ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে। এতে প্রতিবছর প্রায় ৭০ লাখ এসএফটি শিট তৈরি হবে। দেশের বাজারে প্রতি এসএফটি ইপিএস শিট পাওয়া যাবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। একটি এক কক্ষের বাসা (ডাইনিং, কিচেনসহ) দেড় লাখ টাকা খরচ হবে। আর দুই বেডরুমের হলে দুই লাখ ৩০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা ব্যয় হবে।
অ্যাডভান্সড ডেভেলপমেন্ট টেকনোলজিসের কর্মকর্তারা জানান, গ্রামে বাড়ি নির্মাণে টিন, ইটের চেয়ে এই পদ্ধতিতে অল্প খরচ হবে। ইপিএসের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় পেট্রোলিয়ামের বাই প্রোডাক্ট, যা দেখতে মলাসসের মতো। এই বাই প্রেডাক্টটিকে পলিমারাইজেশনের মাধ্যমে ছোট দানায় রূপান্তর করা হয়, যাকে রসায়নের ভাষায় স্ট্রাইরিন মনোমার বলা হয়। ছোট ছোট চিনির দানার মতো দেখতে এগুলো ইউরোপ ও উন্নত দেশ থেকে আমদানি করা হয়। এই দানাগুলোকে উচ্চপ্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি সলিড বডি বা ব্লক বানানো হয়, যার ৯৫ শতাংশই বাতাস এবং ৫ শতাংশ স্ট্রাইরিন মনোমার।
প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলেছেন, ওজন কম হওয়ায় এ ধরনের স্থাপনায় ভূমিকম্পের ক্ষতি অনেক কম হবে। ভবনে লাগানোর সময় প্যানেল টু প্যানেল হুকিং সিস্টেমে লাগানো হয়। এটি যেহেতু হাল্কা তাই এর জন্য কলাম, ফুটিং, ছাদ, লোড বিয়ারিং কিছুই দরকার পড়বে না। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এস এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গজারিয়া প্লান্টে চাহিদা অনুযায়ী ভবিষ্যতে আরো উৎপাদন বাড়াব। আমাদের মতো স্বল্প আয়ের দেশে আমি এটিকে খুবই উপযুক্ত আইটেম মনে করি।’ তিনি আরো বলেন, ‘গ্রামীণ মানুষের জন্য অল্প খরচে বাড়ি বানানোর জন্য আমরা দীর্ঘদিন গবেষণা করেছি। বিদেশি পরামর্শক ও অংশীদাররা আমাদের সহায়তা করেছে। বৃহৎ এই প্রকল্পে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ বাড়ছে। এখন তিনটি ইউনিট চালু রয়েছে, আগামীদিনে অন্তত ২০টি ইউনিট করব।’ কালের কন্ঠ

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button