মন্ত্রিসভায় ৮ নারী, সাজিদ জাভিদ অর্থমন্ত্রী ও প্রীতি প্যাটেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দায়িত্ব নিয়েই নতুন মন্ত্রিসভা সাজিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে গণভোটের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন নিকোলা
যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়া প্রভাবশালী কনজারভেটিভদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে মন্ত্রিসভা সাজিয়েছেন নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার ৩১ সদস্যের মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন ৮ নারী; মে-র মন্ত্রিসভায় ব্রেক্সিট সমর্থক ছিলেন মাত্র ৬ জন, এবার এ সংখ্যা ১২। নতুন মন্ত্রিসভায় সাজিদ সাভিদকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন প্রীতি প্যাটেল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডমিনিক রাব। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বেন ওয়ালেস। ব্রেক্সিট সমর্থক পেনি মরডান্টের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। আরেকজন ব্রেক্সিট সমর্থক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্সকেও পদচ্যুত করা হয়। তার জায়গায় এসেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী গ্রেগ ক্লার্ক। তারা তিনজনই জেরেমি হান্টের সমর্থক ছিলেন।
ডমিনিক রাব ও প্রীতি প্যাটেলকে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে যথাক্রমে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে। চ্যান্সেলর অব দ্য ডাচি অব ল্যাঙ্কাস্টারের পাশাপাশি ‘চুক্তি ছাড়াই’ ব্রেক্সিট সম্পাদনের পরিকল্পনা সামলাতে হবে মাইকেল গোভকে। বেন ওয়ালেস পেয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়; শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে এসেছেন যথাক্রমে গেভিন উইলিয়ামসন ও নিকি মরগান। আন্দ্রিয়া লিডসমকে দেয়া হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দায়িত্ব গেছে লিজ ট্রুসের হাতে।
কমন্সের লিডার করা হয়েছে টোরিদের ব্রেক্সিটপন্থি ইউরোপিয়ান রিসার্চ গ্রুপের (ইআরজি) নেতা জ্যাকব রিস মগকে। মে-র মন্ত্রিসভার স্টিফেন বার্কলে, ম্যাট হ্যানকক ও অ্যাম্বার রুডকে আগের পদেই বহাল রাখা হয়েছে। জনসনের এ মন্ত্রিসভায় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য দেখা গেলেও আনুপাতিক হারে নারীর সংখ্যা কম। মে-র ২৯ সদস্যের মন্ত্রিসভায় নারী ছিল ৩০ শতাংশ, জনসনেরটাতে ২৬ শতাংশ। নতুন মন্ত্রিসভায় আগের মন্ত্রিসভার ১৭ জনের স্থান হয়নি।
নেতৃত্ব দৌড়ে জনসনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জেরেমি হান্ট জানান, তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে অন্য দায়িত্ব দিতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। তার পাশাপাশি শীর্ষ ব্রেক্সিটপন্থি হিসেবে পরিচিত পেনি মরডন্ট ও লিয়াম ফক্সকেও প্রতিরক্ষা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেয়া প্রথম ভাষণে জনসন ‘কোনো যদি কিন্তু ছাড়াই’ ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ব্রেক্সিট কার্যকরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে চুক্তিতে উপনীত হতে তিনি চেষ্টা চালাবেন, না হলে অক্টোবরের শেষে যুক্তরাজ্য চুক্তি ছাড়াই ইইউ ছাড়ছে। বিরোধী লেবার পার্টির নেতারা বলছেন, জনসনের মন্ত্রিসভা যদি ‘চুক্তি ছাড়া’ ব্রেক্সিটের পথে অগ্রসর হয়, তাহলে তারাও যুক্তরাজ্যকে ইইউতে রাখতেই একাট্টা অবস্থান নেবেন।
স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজেওন নতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, ব্রেক্সিট নিয়ে স্কটল্যান্ডের আলাদা পরিকল্পনা আছে। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে গণভোট আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলেও চিঠিতে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পরদিনই মন্ত্রিসভায় ব্যাপক পরিবর্তন আনলেন বরিস জনসন। ব্রেক্সিটের সমর্থক এমপিদেরই মন্ত্রিসভায় প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র মন্ত্রিসভার অর্ধেকেরও বেশি সদস্য পদত্যাগ করেছেন কিংবা বরখাস্ত করা হয়েছে।