জাতি-সত্ত্বার উন্নয়নে লেখক গবেষকরা দীপ্ত মশাল

জালালাবাদ লেখক ফোরামের সাহিত্য সম্মেলন সম্পন্ন

জালালাবাদ লেখক ফোরাম আয়োজিত লেখক সম্মেলন ও জালালাবাদ সাহিত্য পদক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন-জাতি যখনই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে, অধঃপতনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়, তখনই লেখক-গবেষকরা জাতির চেতনায় শান দেন। মস্তিস্ককে জাগ্রত করে তোলেন। সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ করেন দেশ-সমাজ ও মানবিকতাকে। সহজ কথা, পচনশীল সমাজ, লয়মান জাতি সত্ত্বার উন্নয়নে লেখক-গবেষকরা দীপ্ত মশাল হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে অনড় হিমালয়ের মতো সাহস যোগান।
গতকাল শুক্রবার সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদস্থ শহিদ সুলেমান হলে আয়োজিত দিনব্যাপি,লেখক সম্মেলন ও কাউন্সিলে বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। অরাজনৈতিক পেশাজীবী লেখক-গবেষকদের সংগঠন জালালাবাদ লেখক ফোরামের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক ইসলামিক ব্যক্তিত্ব, লেখক-গবেষক, দার্শনিক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী।

ফোরামের সদস্য সচিব মুহাম্মদ রুহুল আমীন নগরী, আহমদ শামসুদ্দীন ও শাহিদ হাতিমীর যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আবুল কাসেম, সিলেটের প্রবীণ সাংবাদিক ও গবেষক আব্দুল হামিদ মানিক, কবি কালাম আজাদ, ডুয়েটের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. ইঞ্জি. মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান,কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহ-সভাপতি গল্পকার সেলিম আউয়াল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী, জালালাবাদ ম্যাটস এর চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমেদ, আল আরাফা ইসলামি ব্যাংক মতিঝিল শাখার অডিট বিভাগীয় প্রধান সাইফুল হক। সংর্বধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন কবি মুসা আল হাফিজ। অনুষ্ঠানে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য কবি মুসা আল হাফিজকে ’’জালালাবাদ সাহিত্য পদক-২০১৯’’ সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, আফতাব চৌধুরী, শাহ মাওলানা আশরাফ আলী মিয়াজানী, প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বাংলা একাডেমির লোক গবেষক আবু সালেহ আহমদ,মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব, বিশিষ্ট লেখক শেখ তাজুল ইসলাম, সিলেট সরকারি কলেজের প্রফেসর ইমদাদুর রহমান চৌধুরী, দরগাহ মাদরাসার শিক্ষক হাফিজ মাওলানা জুনাইদ আহমদ কিয়ামপুরী, সুনামগঞ্জ জেলা ফোরাম প্রতিনিধি মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী,মাওলানা মনজুরে মাওলা, এম. শাহিন মুল্লা, মুফতি মোস্তফা সুহাইল হেলালী, মাওলানা এহতেশামুল হক কাসেমী, মাওলানা ছফি উল্লাহ মাসউদ, মাওলানা এহসান উদ্দীন, হবিগঞ্জ জেলা ফোরাম প্রতিনিধি মাওলানা সাদিক আহমদ,শায়খুল ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল জামেয়ার প্রিন্সিপাল সৈয়দ সালিম কাসিমী আব্দুল বাছির সরদার, মারকাজুল হিদায়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা নুরুজ্জামান সাঈদ, মৌলভীবাজার জেলা ফোরাম প্রতিনিধি এহসান বিন মুজাহির, সিলেট জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি এহসান উদ্দিন, ডা: মুহাম্মদ ফয়জুল হক,মাওলানা শামসির হারুনুর রশীদ, মুফতি রেজাউল করীম আববার, মাওলানা কবির আহমদ খান, মুন্সী আব্দুল কাদের, মাজহারুল ইসলাম জয়নাল, এমদাদুল হক ফয়েজী, মাওলানা জাকারিয়া আল হেলাল, আহমাদুল হক উমামা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, সুস্থ ও শান্তির সমাজ বিনির্মাণে জাতির কাছে লেখকদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। সমাজের প্রকৃত চিত্র সাংবাদিক, লেখক, গবেষকগনই প্রকৃত পক্ষে প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারেন। তাই সকল ক্ষেত্রে মহান আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। দেশ ও জাতির কল্যাণে একজন লেখক ঘুমন্ত জাতিকে সজাগ করতে পারেন। তিনি বলেন, হযরত শাহ জালালের পূন্যভূমিতে আজকের এই আয়োজনের আবেদন অনেক বেশী। তিনি নবীন লেখকদের বেশি করে পড়ার তাগিদ দিয়ে বলেন লেখকরা জাতির সামনে সমৃদ্ধির রোডম্যাপ পেশ করেন। সুতরাং নৈতিকতা ও শুদ্ধতার পক্ষে লিখতে হবে। লেখায় থাকতে হবে উম্মাহ, দেশ, সমাজ, মানবতা ও কল্যাণের বার্তা। তিনি মুসা আল হাফিজের মেধার প্রশংসা করে তার সমৃদ্ধি কামনা করে।
সাহিত্যপদক গ্রহণ পরবর্তী বক্তব্যদানকালে মাওলানা কবি মুসা আল হাফিজ বলেন, ভাবতে হবে- চিন্তার জায়গা থেকে। বলতে হবে- শেষ মনজিল সামনে এনে। লিখতে হবে- শুদ্ধতা ও কল্যাণকামিতার নির্মাতা হয়ে। আমাদেরকে প্রথাগত বৃত্তের বাহিরে যেয়ে সার্বজনিন ও বৈশ্বিক উন্নয়তির চেতনাকে লালন করতে হবে।
সকাল ১০ ঘটকায় শুরু হয়ে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আগামী দুই বছরের জন্য কমিটি ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার সেলিম আউয়াল। বিশিষ্ট গবেষক মাওলানা শাহ মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে সভাপতি মুহাম্মদ রুহুল আমীন নগরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৩ সদস্য বিশিস্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button