বিতর্কিত শিশু নীতি পরিবর্তনের তাগিদ রুশনারা আলীর

যুক্তরাজ্য সরকারের বিতর্কিত একটি শিশু নীতি পরিবর্তনের তাগিদ দিয়েছেন দেশটির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পার্লামেন্ট সদস্য রুশনারা আলী। ওই নীতিতে দরিদ্র পরিবারগুলোর প্রথম দুই সন্তানের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল বরাদ্দ করা হলেও পরিবারে এর অধিক সন্তান থাকলে তারা কোনও রাষ্ট্রীয় সুবিধা পায় না। এই নীতিকে ‘অশ্লীল’ আখ্যা দিয়েছেন লেবার পার্টির ওই আইন প্রণেতা। চলতি সপ্তাহে ব্রিটিশ সরকারের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বিতর্কিত ওই নীতির কারণে প্রায় ছয় লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ওই পরিসংখ্যান সামনে আসার পর ওই নীতি পরিবর্তনের তাগিদ দেন তিনি।

প্রচলিত শিশু নীতি অনুযায়ী করদাতাদের অর্থে গঠিত তহবিল থেকে দরিদ্রতম পরিবারগুলোকে তহবিল সহায়তা দেওয়া হয়। দরিদ্র পরিবারের প্রথম দুই সন্তানের জন্য বার্ষিকভাবে দুই হাজার ৭৮০ ইউরো বরাদ্দ দেওয়া হলেও বর্তমান নীতির আওতায় পরিবারে তৃতীয় কিংবা তার বেশি সন্তান থাকলে তারা এই বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হয়।

বাংলাদেশি অভিবাসী অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন ও বো এলাকা থেকে নির্বাচিত আইন প্রণেতা রুশনারা আলী বলেছেন, ‘আমাদের দরিদ্রতম পরিবারগুলোর জীবনমানের ওপর এই শিশু নীতির ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। ২০২৪ সাল নাগাদ তিন লাখ পরিবার এই নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকারের উচিত এই অশ্লীল নীতি পরিবর্তন করে শিশুদের শাস্তি বন্ধ করা।’

ব্রিটিশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুই সন্তানের ক্ষেত্রে বরাদ্দ সীমিতকরণ নীতির কারণে প্রায় সব দরিদ্র পরিবারই আক্রান্ত হয়েছে। এর ফলে তারা প্রতি সপ্তাহে ৫৩ ইউরো বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে খাবার, চিকিৎসা, বস্ত্রসহ নানা খাতে ব্যয় কমাতে হচ্ছে তাদের। ব্রিটেনের চাইল্ড প্রোভার্টি অ্যাকশন গ্রুপের কর্মকর্তা অ্যালিসন গ্রানহামকে বলেন, যুক্তরাজ্যে কোনও পরিবারে জন্ম নেওয়া তৃতীয় সন্তানকে স্কুল আর হাসপাতালের বাইরে রাখতে পারি না।

এই সীমিতকরণ নীতির কারণে ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিলের পর জন্ম নেওয়া তৃতীয় বা তার পরের সন্তানের জন্য বাবা-মায়েরা চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট দাবি করতে পারে না। ফলে দুই সন্তানের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ তিন, চার বা তার চেয়ে বেশি সন্তানের জন্য ব্যয় করতে হয়। কয়েক বছর আগে যুক্তরাজ্য সরকারের ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশন বিভাগ (ডিডব্লিউপি) এই নীতি বাস্তবায়ন করে। এর উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্র পরিবারের আরও বেশি সদস্যকে কাজে সম্পৃক্ত করা। সরকারের এক মুখপাত্রের দাবি, এই নীতির মাধ্যমে সব পরিবারের জন্য সমান খরচ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button