টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পরিবহন কৌশলের ওপর মতামত জানাতে বাসিন্দাদের প্রতি আহবান
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল তার খসড়া ট্রান্সপোর্ট স্ট্র্যাটেজি বা পরিবহন কৌশলপত্রের ওপর গণপরামর্শ কার্যক্রম শুরু করেছে। ৩০ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই কনসালটেশন আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, টাওয়ার হ্যামলেটসে ট্রাফিক লেভেল বা যান চলাচলের মাত্রা গোটা যুক্তরাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ। যেমন প্রতি তিনটি কার ট্রিপ বা গাড়ি করে যাতায়াতের মধ্যে একটির দূরত্ব ১.২ মাইলেরও কম। যাতায়াতকে কিভাবে আরো টেকসই ও পরিবেশবান্ধব করে তোলা যায়, সেসম্পর্কে বাসিন্দাদের অভিমত জানতে চায় কাউন্সিল।
খসড়া পরিবহন কৌশলপত্রে কাউন্সিল ২০৪১ সালের মধ্যে মোট ট্রিপের ৯০ শতাংশকে পায়ে হাঁটা, সাইকেল ও গণপরিবহন নির্ভর করার উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই কৌশলপত্রে নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহের অন্যতম একটি হচ্ছে বরার রাস্তাগুলো থেকে যানবাহনের জট অপসারণ করা। এছাড়া যানবাহনের অত্যধিক ভিড়কে সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসা, বায়ুর মান উন্নত করা এবং পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবকে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত পরিকল্পনাসমূহের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে এই কৌশলপত্রে।
এ প্রসঙ্গে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র, জন বিগস বলেন, “লন্ডনের দ্রুত বর্ধনশীল বরা হিসেবে আমাদের কীভাবে চলাফেরা করতে হবে, তা আমাদের দেখতে হবে। বায়ূর নিম্নমান ও শব্দ দূষণের খারাপ প্রভাব আমাদের সবার ওপরই পড়ছে। যানবাহন থেকে নির্গমন, অত্যধিক ভিড়াক্রান্ত রাস্তাসমূহ এবং অস্থিতিশীল ভ্রমণ এতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। বাসিন্দারা তাদের প্রতিদিনকার যাতায়াতে যেসকল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, সেসম্পর্কে আমরা জানতে চাই। আমাদের জীবনযাত্রাকে আরো সহজ ও টেকসই করতে এবং সামগ্রিক অর্থে গোটা বরাকে অধিকতর স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও জীবনমান উন্নত করার লক্ষ্যে কার্যকর পন্থা আমরা খুঁজছি।”
বর্তমানে, বরার ৭৭ শতাংশ বাসিন্দা অনিরাপদ দূষণের মাত্রার সংস্পর্শে রয়েছেন। বরার বাচ্চাদের ফুসফুসের সক্ষমতা দশ শতাংশ পর্যন্ত কম এবং শিক্ষাবর্ষ ৬ এর শিক্ষার্থীদের ৪৩ শতাংশ শিশুই অতিরিক্ত ওজন বা স্থুল।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড এর তথ্য অনুযায়ি, এজমা বা শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, ডেমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ, লাং ক্যানসার এবং জন্মকালীন সময়ে শিশুর ওজন কম থাকা ইত্যাদির হার বৃদ্ধির সাথে দূষণের সম্পর্ক রয়েছে। ট্রান্সপোর্ট স্ট্র্যাটেজির মূল লক্ষ্য হচ্ছে, পায়ে হেঁটে ও সাইকেলে চলাচলকে উৎসাহিত করা। এর মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বরার সমুদয় যাতায়াত ট্রিপের ৯০ শতাংশকে পায়ে হাঁটা, সাইকেল অথবা গণপরিবহন ভিত্তিক করতে মেয়র অব লন্ডনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
যারা বসবাস কিংবা কর্মসূত্রে এই বরায় অবস্থান করেন, আগামী দুই মাস তাদের কাছে এই খসড়া পরিবহন পরিকল্পনা সম্পর্কে তাদের অভিমত ও আইডিয়া সমূহ জানতে চাইবে কাউন্সিল।
কেবিনেট মেম্বার ফর দ্যা এনভায়রনমেন্ট, কাউন্সিলর ডেভিড এডগার বলেন, ব্যস্ততম ইনার লন্ডন বরা হওয়ায়, আমাদের প্রধান প্রধান সড়কগুলো ব্যবহার করে বিপুল সংখ্যক যানবাহনের আসা-যাওয়ার কারণে আমরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের দরকার একটি ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক। একই সাথে আমরা জনসাধারণকে যাতায়াতের অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে চাই।
কাউন্সিলর এডগার আরো বলেন, এ ব্যাপারে আমরা স্থানীয় জনসাধারণের কাছ থেকে তাদের অভিমত জানতে চাই, যাতে করে আমরা যান চলাচল অব্যাহত রেখে অন্যান্য বিকল্প যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনের সাথে কাজ করতে পারি। টেকসই যাতায়াত নিশ্চিত করতে কি কি করা দরকার তা চিহ্নিত করতে এই কনসালটেশন আমাদের সাহায্য করবে।
উল্লেখ্য, এ১১, এ ১২ ও এ১৩ সহ সকল প্রধান প্রধান সড়ক, বাস, আন্ডারগ্রাউন্ড, ডিএলআর এবং ওভারগ্রাউন্ড সার্ভিসসমূহ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করে থাকে ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন।
www.towerhamlets.gov.uk/Transport2019 – এই ওয়েবসাইটে গিয়ে বাসিন্দারা খসড়া পরিবহন পরিকল্পনা পড়তে এবং কোথায় কবে কনসালটেশন ইভেন্ট হবে, সেই তথ্য জানতে ও নিজের অভিমত তুলে ধরতে পারবেন।