পবিত্র হজ পালিত: লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাত ময়দান
সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানে মসজিদ নামিরায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে শনিবার শেষ হয়েছে পবিত্র হজ। ধবধবে সাদা ইহরাম কাপড় পরা ২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলিম জোহর ও আসরের নামাজ এক আজানে দুই ইকামতে আদায় করেন। এবার বাংলাদেশ থেকে (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) এক লাখ ২৭ হাজার ১৫২ জন হজ পালন করেন। সৌদি সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশসহ ১৫০টি দেশ এবারের হজে অংশ নেয়। আর এ দিনটিকে বলা হয় আরাফাত দিবস। পবিত্র অনুভব আর ঐশী আবেগে উদ্ভাসিত লাখো মুসল্লির উপস্থিতিতে আরাফাতের সব প্রান্তর ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। জাবালে রহমতে (রহমতের পাহাড়ে) কেবল মানুষ আর মানুষ। ইসলামের ইতিহাসে হজ পালনে শুভ্র বসনে, অভিন্ন অবস্থানে অগণিত নারী-পুরুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় সেই ধ্বনি ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’, ‘লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা শারিকালাক’।
সৌদি স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া ১২টায় আরাফাতের মসজিদ নামিরায় হাজিদের উদ্দেশে পবিত্র হজের খুতবা পাঠ করেন নতুন খতিব ড. মুহাম্মাদ বিন হাসান আল-শাইখ। এই খুতবায় মুসলিম উম্মাহর জন্য থাকে নানা দিকনির্দেশনা। ৩০ মিনিটব্যাপী প্রদত্ত খুতবার পর পরই স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে জোহরের সময় একই সঙ্গে জোহর ও আসরের কসর সালাতে ইমামতি করেন তিনি। এটাই হচ্ছে হজের নিয়ম। সূর্যাস্ত পর্যন্ত লাখো লাখো হাজির সময় কাটবে দোয়া, মোনাজাত, আলস্নাহর দরবারে ফরিয়াদ করে। সূর্যাস্তের পর পরই হাজিরা মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা হন। রাতে মুজদালিফায় অবস্থান শেষে পরের দিন রোববার ভোর পর্যন্ত ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থেকে জামারায় শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার পর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি দেন। আর এরই মধ্য দিয়ে শেষ হয় পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
মুসলিম জাতির দৃষ্টি ছিল আরাফাতের ময়দানে, কোটি হৃদয়ের স্পন্দন ছিল জাবালে পাহাড়কে ঘিরে, দেশ-দেশান্তরের লাখো হজযাত্রী যেন শত কোটি মুমিনের প্রতিনিধি হয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সামনে নিজের সব কিছু বিলিয়ে দেওয়ার দৃপ্ত শপথ নেন। এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুলস্নাহ, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়াসহ কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হজ পালন করেন।