চুক্তিহীন ব্রেক্সিট: জ্বালানি, ওষুধ ও খাদ্যসঙ্কট সতর্কতা রিপোর্টে
কোনও চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়লে ব্রিটেনে জ্বালানি, খাদ্য ও ওষুধের প্রবল সঙ্কট হবে। সরকারি নথি উদ্ধৃত করে রোববার এই দাবি করেছে ব্রিটেনের এক সংবাদপত্র। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই বরিস জনসন দাবি করেছিলেন, যে কোনও মূল্যেই ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যদি আলোচনার টেবিলে আবার বসতে না-চায়, চু্ক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট হবে। সেই প্রস্তাবে সিঁদুরে মেঘ দেখছিলেন অনেকেই। ফাঁস হয়ে যাওয়া সরকারি নথিও বলছে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ফলে সঙ্কটে পড়বে দেশের অর্থনীতি, ব্রিটেনের মানুষও। প্রধানমন্ত্রীর দফতর অবশ্য এই ফাঁস হয়ে যাওয়া নথি নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে, বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যে সব লরি ব্রিটেনে ঢোকে, তার ৮৫ শতাংশ আসে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে ফরাসি সীমান্ত অফিসারেরা প্রথমে বুঝে উঠতেই পারবেন না যে, সেই সব লরির কাছ থেকে কী ভাবে শুল্ক নিয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ফলে সীমান্তে লরির ভিড় জমবে। বিপুল খাদ্যসঙ্কট দেখা দেবে ব্রিটেনে। সব স্বাভাবিক হতে তিন মাস লাগবে বলে দাবি প্রতিবেদনে।
গত তিন বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ব্রেক্সিট। সদ্য সরে যাওয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে-র সময়ে বারবার তার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ইইউ নেতারা। টেরিজার করা একাধিক খসড়া চুক্তিতেও সায় দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কোনও চুক্তিই পাশ করাতে পারেননি তিনি। যার ফলে দলের নেতৃত্ব ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফাও দিতে হয় তাকে। এ বার ইইউ নেতৃত্ব অনড়। তারা জানিয়ে দিয়েছেন, খসড়া চুক্তিতে আর কোনও পরিবর্তন তারা মেনে নেবেন না।
কট্টরপন্থী জনসন প্রথম থেকেই বলছেন, তিন বছর আগের গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষেই সায় দিয়েছিলেন মানুষ। তাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট হবেই। ব্রেক্সিট নিয়ে ফের কথা শুরু করতে আগস্টেই পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন ডাকার জন্য জনসনকে অনুরোধ করে চিঠি লিখেছেন একশো জনেরও বেশি পার্লামেন্ট সদস্য। এ সপ্তাহে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ইমানুয়েল ম্যাখো-র সঙ্গে কথা বলবেন জনসন।