কাশ্মির নিয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স
কাশ্মির সঙ্কটকে একটি দ্বিপক্ষীয় বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। আরেক ইউরোপীয় পরাশক্তি ফ্রান্সও বিষয়টিকে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
অনেকটা একই সুরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, কাশ্মির নিয়ে ভারতের যে কোন সিদ্ধান্তের প্রভাব আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ওপর পড়বে। তাই বিষয়টি নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি আলোচনা হওয়া উচিত। কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতি দিকেও নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে টেলিফোন আলাপে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কাশ্মির প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী জনসন ও প্রধানমন্ত্রী মোদি কাশ্মিরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী জনসন এটা স্পষ্ট করেন যে, কাশ্মির ইস্যুটি ভারত ও পাকিস্তানকে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করতে হবে। এটিই ব্রিটিশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি। সংলাপের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে হবে।
আরেক ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, কাশ্মির সঙ্কটকে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করতে আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জ্যঁ ইয়েভস লা দারিয়াঁ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশির সাথে টেলিফোন আলাপের পর মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেন। টেলিফোনে তারা কাশ্মির পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন। কাশ্মির কারো একক নয় বরং দুই দেশের মধ্যকার বিষয় উল্লেখে করে তিনি ফ্রান্সের অবস্থান পূণর্ব্যক্ত করেন।
আরেক রিপোর্টে দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ওয়াশিংটন মনে করে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত হলেও ভারতের সীমানার বাইরেও এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি, বন্দিদের মুক্তিসহ মৌলিক স্বাধীনতার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে আলাপকালে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা স্বীকার করছি এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়; কিন্তু এর প্রভাব রয়েছে বর্হিবিশ্বে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়ে আসছি।
ওই কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমে তার নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বলেন, আমি মনে করি কাশ্মির ইস্যুতে আপনি যদি আমাদের পদক্ষেপের দিকে তাকান তাহলে দেখতে পাবেন আমরা মানবাধিকার পরিস্থিতি, বন্দীদের মুক্তি ও স্থিতিশীলতা চাই যেমনটি প্রধানমন্ত্রী মোদি তার বক্তৃতায় বলেছেন। রাজনৈতিক ইস্যুতে সংলাপও শুরু হোক দ্রুত। ভারত সরকার এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করুক সেটিই আমরা চাই।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কাশ্মিরে গ্রেফতার ও নাগরিকদের জীবনযাপনের ওপর বিধিনিষেধের খবরে আমরা গভীরবাবে উদ্বিগ্ন। প্রত্যেকের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমরা আহ্বান জানানই। যাই হোক সেটা যেন আইনিভাবে হয় এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে সংলাপ শুরু হোক।’
তিনি বলেন, পাকিস্তানের জন্য কাশ্মির সব সময়েই গুরুত্বপূর্ণ…. বিষয়টি আবেগের সাথেও জড়িত। ছায়া শক্তিগুলো যেন তাদের কাছ থেকে কোন সুবিধা না পায় সেজন্য ব্যবস্থা নেয়ার এটিই গুরুত্বপূর্ণ সময়।