৩৬ ঘন্টায় বিশ্বজুড়ে ছড়াতে পারে ফ্লু, মারা যেতে পারে ৮ কোটি মানুষ

মাত্র ৩৬ ঘন্টার মধ্যে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে ফ্লু। এমনটা হলে বিশ্বে মারা পড়বে ৮ কোটি মানুষ। এ সতর্কবাণী দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাবেক প্রধান ডা. গ্রো হারলেম ব্রান্ডটল্যান্ড। বিশ্বের উচ্চ পদস্থ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তার লেখা ‘এ ওয়ার্ল্ড অ্যাট রিস্ক’ শিরোনামের এক রিপোর্টে তিনি ও তার সঙ্গী গবেষকরা এসব কথা বলেছেন। বলা হয়েছে, যদি এমন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তা মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই বিশ্ব নেতাদের। এ খবর দিয়েছে ব্রিটেনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।

রিপোর্টে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে একশত বছর আগে স্পেনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া ফ্লুর কথা। তাতে আক্রান্ত হয়েছিল বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ। আর মারা গিয়েছিলেন কমপক্ষে ৫ কোটি মানুষ। এখন আগের চেয়ে মানুষের দেশান্তরী হওয়া বা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এখন যদি ওই একই রকম ফ্লুর প্রাদুর্ভাব ঘটে তাহলে তার প্রতিক্রিয়া হবে খুবই ভয়াবহ। এক্ষেত্রে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ওই রিপোর্টটি তৈরি করেছেন ডব্লিউএইচও’র সাবেক প্রধানের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিষয়ক অভিজ্ঞদের একটি টিম- দ্য গ্লোবাল প্রিপেয়ার্ডনেস মনিটরিং বোর্ড (জিপিএমবি)।

বুধবার প্রকাশিত ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে এমন মহামারি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এখন বাস্তব। দ্রুত বিস্তার লাভের সক্ষমতা আছে এসব রোগের। এর ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে কয়েক কোটি মানুষ মারা যেতে পারেন। তাতে বিঘ্নিত হতে পারে অর্থনীতি। অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে জাতীয় নিরাপত্তা। ওই রিপোর্টে ইবোলার মতো মহামারির প্রাদুর্ভাবের প্রস্তুতির বিষয়ে খুবই কম পর্যাপ্ত প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে। এর আগের রিপোর্টেও জিপিএমবি বেশ কিছু সুপারিশ উত্থাপন করেছিল। কিন্তু বিশ্বনেতারা তার প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়েছেন বলে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সুপারিশগুলোর অনেকটাই খুব দুর্বলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অথবা আদৌ বাস্তবায়ন করাই হয়নি। অথবা বড় ধরনের ফারাক রয়েছে। ওই রিপোর্টে বিশ্বের একটি মানচিত্র যুক্ত করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কোথায় কোথায় সংক্রমণ ঘটতে পারে। এর আগে ছড়িয়ে পড়েছিল ইবোলা, জাইকা, নিপা ভাইরাস এবং ৫ রকমের ফ্লু। এর মধ্যে আছে ওয়েস্ট নিল ভাইরাস। এটি এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে কাজ করে। সৃষ্টি করে ইয়েলো ফিভার, ডেঙ্গু, প্লেগ, মাঙ্কিপক্স।

১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লুর মহামারি যে ক্ষতি করেছিল তা তুলে ধরা হয়েছে ওই রিপোর্টে। এতে বলা হয়, আধুনিক সময়ে উন্নত প্রযুক্তির কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এমন ভাইরাস বা ফ্লুর প্রাদুর্ভাব হলে তা আরো দ্রæত গতিতে ছড়িয়ে পড়বে। কারণ, বিমানে করে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাচ্ছে। ফলে বাতাসবাহিত ফ্লু দ্রæত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে। তাতে মারা যেতে পারেন ৫ কোটি থেকে ৮ কোটি মানুষ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button